গুজব প্রতিরোধে ‘আসল চিনি’ ক্যাম্পেইন শুরু
৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:০২
ঢাকা: সামাজিক যোযোগাযোগমাধ্যমসহ অনলাইনে মিথ্য তথ্য প্রচার ও গুজব প্রতিরোধে দেশের মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য ‘আসল চিনি’ নামে একটি ক্যাম্পেইন চালু করেছে সরকার। ক্যাম্পেইনের আওতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ‘অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে তরুণ-তরুণীদের নিয়োগ দিয়ে তাদের মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি ভবনে গুজব ও মিথ্যা তথ্য প্রতিরোধে ‘আসল চিনি’ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আইসিটি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উদ্যোগে গুজব ও মিথ্যা তথ্যের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে দেশব্যাপী এই কর্মসূচি পরিচালিত হবে। গুজব প্রতিরোধে বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট তৈরি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হবে এই কর্মসূচির আওতায়।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ও গুজবের ভিড়ে অনেক সময় আসল-নকল চেনা দায়। এ কারণে দেশে সামাজিক শন্তি বিনষ্ট ও সম্পদ ধ্বংস হয়েছে। এমনকি প্রাণহানির মতোও ঘটনা ঘটেছে। অথচ সামান্য বিবেক বুদ্ধি খাটিয়েই কোনটি সত্য, কোনটি মিথ্যা এবং কোনটি গুজব তা আমরা সহজেই চিনতে পারি। এ ধরনের গুজব রটানো ও অপপ্রচার বন্ধ করতেই আইসিটি বিভাগের এই আসল চিনি ক্যাম্পেইন।’
পলক বলেন, ‘মিথ্যা ও গুজব প্রতিরোধে আত্মসচেতনতা তৈরি করতে হবে। দেশের সাড়ে ৪ কোটি সোস্যাল মিডিয়া ইউজারকে যদি সচেতন করতে না পারি তাহলে ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে আমরা শতভাগ ডিজিটাল লিটারেটেড জাতি গড়ে তুলবো, সেটি আমাদের লক্ষ্য। এজন্য প্রথমে ব্যক্তিকে সচেতন হতে হবে। পরে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র। সবাই সচেতন থাকলে যারা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেয়, তাদের ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। যারা মিথ্যা তথ্য তৈরি করে এবং ছড়ায় সবাই সচেতন হলে তাদের প্রতিরোধ করা সম্ভব। এজন্য দেশের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ‘বিল্ডিং জিডিটাল লিটারেট ন্যাশন’ শীর্ষক একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। সেখানে তিনি জানান, এই ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে দুর্বার শীর্ষ একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। এ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নিবন্ধনের মাধ্যমে সারাদেশে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভার আওতাধীন ওয়ার্ড, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে দুজন করে অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ দেওয়া হবে, যারা গুজবের ভয়াবহতা ও এবং কীভাবে সত্য-মিথ্যা ও গুজব চেনা যায় সে সম্পর্কে মানুষকে সচতেন করবে। গুজব ও মিথ্যা তথ্যের ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পলক বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অনলাইনে মিথ্যা তথ্য প্রচার ও গুজব বন্ধে দেশের তরুণ সমাজই পারে সবেচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে ক্যাম্পেইনে যুক্ত হতে চাইলে www.durbar21.org ঠিকানায় গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। এছাড়া দুর্বারের ফেসবুক পেইজ, টুইটার ও ইউটিউব চ্যানেল থেকেও বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যাবে।
এলআইসিটি প্রকল্পের পরিচালক ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক প্রার্থপ্রতিম দেব, বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরসহ আরও অনেকে।