চকবাজারের এক গোডাউনেই সাড়ে ৩ কোটি টাকার নকল কসমেটিকস!
৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:২৮
ঢাকা: সৌন্দর্যবর্ধন ও ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত নামি-দামি ব্র্যান্ডের কসমেটিকসের নকল পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযানে মাঠে নেমেছে র্যাব। রাজধানীর চকবাজারে এমনই এক অভিযানে একটি গোডাউন থেকেই জব্দ করা হয়েছে সাড়ে ৩ কোটি টাকার নকল পণ্য। র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত জানিয়েছে, নকল কসমেটিকস সরবরাহের অভিযোগে পাঁচ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চকবাজারের মৌলভীবাজার এলাকায় অভিযানে যায় র্যাব। সেখানকার তাজমহল টাওয়ারে তাকওয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের গোডাউন থেকে জব্দ করা হয় এসব নকল কসমেটিকস পণ্য। র্যাব-১০ ও বিএসটিআইয়ের সদস্যদের সহায়তায় অভিযানের নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম।
আরও পড়ুন- মেয়াদহীন ও নকল প্রসাধনীতে বাজার সয়লাব, বাড়ছে ক্যানসারের ঝুঁকি
অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, র্যাব ও বিএসটিআইয়ের যৌথ উদ্যোগে চকবাজার থানার মৌলভীবাজার এলাকার তাজমহল টাওয়ারে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে বিপুল পরিমাণ নকল পণ্যের সন্ধান পাই আমরা।
সারওয়ার আলম বলেন, মানুষের মধ্যে সৌন্দর্যবর্ধন ও ত্বকের যত্ন সম্পর্কিত পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। মানুষের এই চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে নকল কসমেটিকস পণ্যে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। আমরা দেখছি তিনভাবে তারা পণ্য নকল করে থাকে। যেমন চীন থেকে পণ্যের খালি বোতল আমদানি করে। আবার নিজেরাই বিভিন্ন কোম্পানির নামে পণ্য ও বোতল বানায়। আর সবশেষ ধাপে তারা ব্যবহৃত পণ্যের খালি বোতল বাজার থেকে কিনে এনে পরিষ্কার করে তাতে নকল পণ্য রিফিল করে বিক্রি করে।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, আজ যে প্রতিষ্ঠানে আমরা অভিযান চালিয়েছি, তারা চীন থেকে খালি বোতল কিনে এনে স্থানীয়ভাবে নকল পণ্য রিফিল করে বাজারজাত করে। জনসন শ্যাম্পু, জনসন পাউডার, ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম, লোশন ইত্যাদি নকল পণ্য তৈরি করে তারা বাজারে সরবরাহ করছে। এগুলো ব্যবহারে শরীরের নানা ধরনের সমস্যা, এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে তাকওয়া এন্টারপ্রাইজের মালিকসহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের প্রত্যেককে দুই বছরের কারাদণ্ডও দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সাড়ে তিন কোটি টাকার মূল্যের নকল পণ্য জব্দ করা হয়। এই কোম্পানির নামে থাকা চারটি দোকান এবং তিনটি শোরুম সিলগালা করে দিয়েছে র্যাব।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন বিএসটিআইয়ের ফিল্ড অফিসার মো. শরিফ হোসেন। তিনি বলেন, আজকের অভিযানে তাজমহল টাওয়ারে তাকওয়া এন্টারপ্রাইজের প্রথম তলা থেকে পাঁচ তলা পর্যন্ত মোট চারটি গোডাউন পাওয়া গেছে। এরা রঙ ফর্সাকারী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ক্রিম, লোশন, শ্যাম্পু, সাবানসহ প্রায় ৫০ ধরনের নকল পণ্য বাজারজাত করে আসছে। জব্দ করা প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার পণ্যের কোনোটিরই বিএসটিআই থেকে অনুমোদন দেওয়া হয় না। এর সবগুলোই অবৈধ।
বিএসটিআইয়ের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এসব রঙ ফর্সাকারী ক্রিম মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলোতে হাইড্রোকুইনোন ও মার্কারি বা পারদ ব্যবহার করা হয়। এগুলো মানবদেহের ক্ষতি করে। এসব রাসায়নিকের ব্যবহারের কারণে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে।
কসমেটিকস চকবাজার তাকওয়া এন্টারপ্রাইজ তাজমহল টাওয়ার নকল কসমেটিকস বিএসটিআই র্যাবের অভিযান সারওয়ার আলম