Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নতুন ৩ জাতের ধান আনলো ব্রি


৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:২৫

ঢাকা: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক উদ্ভাবিত নতুন আরও তিনটি ধানের জাতের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড। অনুমোদন পাওয়া বোরো ও আউশ মৌসুমে চাষাবাদের উপযোগী ব্রি ধান ৯৭, ব্রি ধান ৯৮ ও ব্রি ধান ৯৯। প্রচলিত জাতগুলোর চেয়ে এ ধান উচ্চফলনশীল ও উন্নতমানের।

বোরো মৌসুমের জাত ব্রি উদ্ভাবিত ব্রি ধান ৯৭ ও ব্রি ধান ৯৯ লবণাক্ততা সহিষ্ণু ও দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে চাষাবাদের উপযোগী। আর ব্রি ধান ৯৮ সারা দেশে আউশ মৌসুমে চাষাবাদের জন্য অবমুক্ত করা হয়। নতুন এই তিনটি জাত উদ্ভাবনের ফলে ব্রি উদ্ভাবিত সর্বমোট ধানের জাতের সংখ্যা ১০৫টিতে দাঁড়িয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘নতুন করে ৩ টি জাত অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে দুটি লবণাক্ততা সহিষ্ণু। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট অর্থাৎ যেসব এলাকায় চিকন চাল পছন্দ করে সেখানে বোরো মৌসুমে চাষাবাদযোগ্য ব্রি ধান ৯৯। হেক্টরে এর ফলন ৭ টন। আর বরিশাল অঞ্চলে বোরো মৌসুমে চাষাবাদযোগ্য ব্রি ধান ৯৭। এর উৎপাদনও ৭ টন। এটি মোটা ও ব্রি ধান ৪৭ এর পরিবর্তে আবাদযোগ্য আর এই এই জাতটি থেকে নতুন জাতে উৎপাদনও এক টন বেশি। আউশ মৌসুমের জন্য উদ্ভাবিত ব্রি ধান ৯৮ এর ফলন হেক্টরে ৫ থেকে ৬ টন, আউশের অন্য একটি জাত ব্রি ধান ২৬ থেকে এর ফলন হেক্টরে ১ টন বেশি। আর এর চালে এমাইলোজের পরিমাণও বেশি।’

ব্রি ধান-৯৭: এটি বোরো মৌসুমের উচ্চ ফলনশীল লবণাক্ততা সহনশীল ধানের জাত। এর চারা অবস্থায় ১৪ ডিএস/মি এবং সমগ্র জীবনকাল ৮-১০ ডিএস/মি লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। ব্রি ধান ৯৭ এর গড় জীবনকাল ১৫২ দিন এবং গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৪.৯ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে হেক্টর প্রতি ৭.০ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম । এ জাতের ১০০০ টি পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ২৫.৫ গ্রাম। ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৫.২ ভাগ এবং প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৮.৬ ভাগ।

বিজ্ঞাপন

গাছের গড় উচ্চতা ১০০ সে.মি. ও ডিগপাতা খাড়া। এর চাল মাঝারি মোটা হওয়ায় বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর ও খুলনা অঞ্চলে অধিক জনপ্রিয় হবে।

ব্রি ধান ৯৮: ব্রি ধান ৯৮ আউশ মৌসুমে চাষ উপযোগী জাত। এর ফলন প্রতি হেক্টরে ৫.০৯ থেকে ৫.৮৭। এর দানা লম্বা ও চিকন। এ জাতের ধানের দানার রং সোনালী। এ জাতের জীবনকাল ১১২ দিন যা রোপা আউশ মৌসুমের জাত বিআর ২৬ এর সমান। ১০০০ টি পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ২২.৬ গ্রাম। ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৭.৯ ভাগ এবং প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৯.৫ ভাগ। ভাত ঝরঝরে।

ব্রি ধান-৯৯: বোরো মৌসুমে আবাদযোগ্য ব্রি ধান ৯৯ এর গড় জীবনকাল ১৫৫ দিন এবং গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৫.৪ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে হেক্টর প্রতি ৭.১ টন পর্যন্ত ফলন দিতে পারবে। এ জাতের ১০০০ টি পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ২২.৮ গ্রাম। ধানের দানায় অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৭.১ ভাগ এবং প্রোটিনের পরিমাণ শতকরা ৭.৯ ভাগ। গাছের গড় উচ্চতা ৯৪ সে.মি. ও ডিগপাতা খাড়া। এর চাল লম্বা ও চিকন হওয়ায় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও খুলনা অঞ্চলে অধিক জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত জাতীয় বীজ বোর্ডের সভায় জাত তিনটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কৃষি টপ নিউজ নতুন জাতের ধান নতুন ধান বীজ বোর্ড ব্রি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর