Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কাঁচা পাট রফতানি বন্ধের দাবি


৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:১৮

ঢাকা: চলতি বছর পাটের উৎপাদন কমে যাওয়ায় কাঁচা পাট রফতানি বন্ধের অনুরোধ জানিয়েছে বেসরকারি পাটকল মালিকদের দুই সংগঠন বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ)। একইসঙ্গে সংগঠন দুইটির পক্ষ থেকে প্রতি মেট্রিক টন কাঁচা পাট রফতানিতে ২৫০ মার্কিন ডলার রফতানি শুল্ক আরোপের দাবি জানানো হয়েছে।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিজেএমএ‘র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী ও বিজেএসএ‘র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহিদ মিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান ফারিয়ান ইউসুফ, পরিচালক নাজমুল হক, পরিচালক মৃধা মনিরুজ্জামান, জেনারেল সেক্রেটারি শহীদুল করিম ও সদস্য কাজী ইনাম আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে বিজেএসএ‘র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, এখন আমাদের কাঁচা পাটের সর্বোচ্চ মূল্য ২৭৫০ টাকার মতো। আমাদের মিল মালিকরা এখন কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। যখন আমরা জুট মিলসের মিটিং করছিলাম, তখন এটার মূল্য সর্বোচ্চ ছিল ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকা। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিমণ পাটের দাম বেড়েছে আড়াইশ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা। ভরা মৌসুমে কাঁচাপাটের মূল্য ২৭৫০ টাকা হতে পারে, এটা কারও অভিজ্ঞতায় নেই। এতে উৎপাদন শেষে যা মূল্য দাঁড়াবে, তাতে বায়াররা তা কিনতে চাইবে না।

তিনি আরও বলেন, পাটপণ্যের মূল্য নির্ধারণ হয় কাঁচাপাট কেনার মূল্যের ভিত্তিতে। পাটপণ্য তৈরিতে প্রায় ৭৫ শতাংশ কাঁচাপাট কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। এর দাম অনেক বেশি বেড়ে গেলে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। কাঁচা পাট সরবরাহ ঘাটতির কারণে পাটকল বন্ধ হয়ে গেলে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রেতারা পাটপণ্য ব্যবহার থেকে সরে দাঁড়াবে। সেটা হবে দেশের পাটশিল্পের জন্য মারাত্মক বিপজ্জনক।

সম্মেলনে বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. জাহিদ মিয়া বলেন, ‘বর্তমান পাট মৌসুমে খরা ও অতিবন্যার কারণে কাঁচা পাটের ফলনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে পাটের এই ভরা মৌসুমেও।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাধারণত ৭৫ লাখ বেল কাঁচা পাট উৎপাদন হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছর তা হবে প্রায় ৫৫ লাখ বেল। পাটশিল্পের জন্য কাঁচাপাটের প্রয়োজন হবে প্রায় ৬০ লাখ বেল। এছাড়াও গৃহস্থালী ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন প্রায় পাঁচ লাখ বেল। অর্থাৎ মোট কাঁচা পাটের প্রয়োজন প্রায় ৬৫ লাখ বেল। সে হিসাবে এ বছর প্রায় ১০ লাখ বেল পাট কম উৎপাদন হয়েছে। প্রতিবছর ৭৫ লাখ বেল পাট উৎপাদন হওয়ায় চাহিদা মিটিয়ে আট থেকে ১০ লাখ বেল কাঁচা পাট রফতানি করা যায়। কিন্তু এ বছর উৎপাদন কম হওয়ায় কাঁচা পাট রফতানি হলে আমরা ব্যাপক ঘাটতির মুখে পড়ব। তাই আগে আমাদের নিজেদের চাহিদা পূরণ করে পরে রফতানি করা দরকার।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে ২৫৯টি পাটকল রয়েছে। এই পাটকলগুলো পরিচালনায় বছরে ৬০ লাখ বেল কাঁচা পাটের প্রয়োজন হয়। বেসরকারি এই শিল্প খাতে কর্মরত আছেন ২ লাখ শ্রমিক। পরোক্ষভাবে এই শিল্প খাতে চার কোটি মানুষের কর্মসংস্থান। প্রতিবছর দেশে মোট ৭ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন পাটপণ্য উৎপাদন হয়। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিক টন পাটপণ্য রফতানি হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ৫২০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে। কাঁচা পাটের অভাবে পাটকল বন্ধ হয়ে গেলে এই শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীরা চাকরি হারাবেন এবং দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

কাঁচা পাট পাট রফতানি বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন বিজেএমএ বিজেএসএ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর