Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অফিসে বসে সিসি ক্যামেরায় থানা মনিটরিংয়ের ঘোষণা সিএমপি কমিশনারের


১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:৩৫

চট্টগ্রাম ব্যুরো: অফিসে বসে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় থানা মনিটরিংয়ের ঘোষণা দিয়েছেন সদ্য দায়িত্ব নেওয়া চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। এ ছাড়া সিএমপিতে কর্মরতদের পেশাদারিত্বের বাইরে কোনো কর্মকাণ্ডে না জড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনের মাল্টিপারপাস শেডে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব বিষয় জানিয়েছেন তিনি। দায়িত্ব নেওয়ার তিনদিন পর গণমাধ্যম কর্মীদের মুখোমুখি হয়ে নিজের বক্তব্যের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন সিএমপি কমিশনার।

বিজ্ঞাপন

থানাকে দালালমুক্ত করার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘প্রতিটি থানায় গুরুত্বপূর্ণ অংশে তিন থেকে চারটি ক্যামেরা থাকবে। আমার অফিস থেকে মনিটরিং করা হবে। থানায় যে কে আসল, কে গেল সেটা মনিটরিং করা হবে। তবে থানা তো পাবলিক অফিস, এখানে যে কেউ আসতে পারে। আমরা খেয়াল রাখব যে, থানায় যাতে আইনের বাইরে ব্যক্তির প্রভাবে কোনো কাজ না হয়।’

‘পুলিশের সেবার মূল কেন্দ্র হচ্ছে থানা। সেগুলোকে আমরা নিবিড় মনিটরিংয়ের আওতায় আনব। ডিজিটালাইজেশন করা হবে। ভুক্তভোগীরা যাতে নিবিড়ভাবে সেবা পান, সেটা আমরা অবশ্যই মনিটরিং করব। এ ছাড়া পুলিশের পেট্রোলিংকে আরও বেগবান করার জন্য যা যা দরকার সেটা করার চেষ্টা করব।’

বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদায়নের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এসব কাজ তো কেউ প্রেস কনফারেন্সে ঘোষণা দিয়ে করে না। সুতরাং আমি বলব, আপানারা আমাকে পর্যবেক্ষণ করুন। আমার কাজ দেখুন। তারপর আপনারা আপনাদের মতামত দেবেন। আমার চাকরির বয়স ২৩ বছর। অনুরোধ করব, আপনারা আমার আগের যেসব কর্মস্থল আছে, সেখানে আপনাদের (সাংবাদিকদের) যেসব সহকর্মী আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে আমার সম্পর্কে জানুন। তারপর আমাকে মূল্যায়ন করুন।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম নগরীর বেহাল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কয়েকটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ট্রাফিকের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় আছে। এনফোর্সমেন্ট, ম্যানেজমেন্ট ও ইঞ্জিনিয়ারিং। এখানে এনফোর্সমেন্টটাই মূলত আমাদের দায়িত্ব। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর এরইমধ্যে ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে বসেছি। তাদের কাছে সাজেশন পেপার চেয়েছি। তাদের অভিজ্ঞতা থেকে তারা যেন আমাকে জানায়। একেবারে স্পটভিত্তিক সমস্যাটা জানতে চেয়েছি। তারা সমস্যা চিহ্নিত করে আমাকে জানাবে। তারপর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে বসব। ওনার চিন্তা-ভাবনাটা জেনে সমন্বিতভাবে কাজ করব।’

‘আপনারা (সাংবাকিদকরা) জানেন, শহরের বড় অংশে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। এর প্রভাব তো অবশ্যই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার ওপর পড়ছে। রাস্তার মানও ভালো না। চট্টগ্রাম বন্দর আছে। সেখানে কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে বন্দরকেন্দ্রিক পরিবহনও বেড়েছে। এখানে এককভাবে সিএমপিকে দায়ী করলে হবে না। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তো আর সিএমপিকে বলে-কয়ে শুরু হয় না। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা ট্রাফিক ডিভিশনকেও ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনব। রাস্তায় আমাদের যেসব সহকর্মী আছেন, তাদের নিবিড় মনিটরিংয়ের আওতায় আনা হবে। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী অবশ্যই করব।’

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এটা আমরা অত্যন্ত প্রফেশনালি ডিল করব। কোনো ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠান নেবে না। প্রত্যেককে তার নিজের দায় নিতে হবে।’

করোনাকালে মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য সিএমপির যে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে, সেটি ধরে রাখার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। তিনি বলেন, ‘মানবিক পুলিশিংয়ের যে কনসেপ্ট সিএমপিতে আছে, অনন্য উদ্যোগ, এটাকে আরও বেগবান করার চেষ্টা করব। সিএমপির অর্জনটুকু ধরে রাখার চেষ্টা করব। উন্নয়েনের সুযোগ যেখানে আছে, সেখানে কাজ করার চেষ্টা করবো। আমার সহকর্মীরা অবশ্যই দৃঢ় প্রতিজ্ঞভাবে সিএমপির এই মান ধরে রাখার চেষ্টা করবেন। সিএমপিকে আরও পেশাদার, মর্যাদাসম্পন্ন, জনবান্ধব এবং মিডিয়াবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করব।’

পেশাদারিত্বের ওপর সর্বোচ্চ ‍গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ বাড়ানো, শীর্ষপর্যায় থেকে তদারকি নিবিড় করা এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্তের মান উন্নয়নের কথাও বলেছেন সিএমপি কমিশনার।

কিশোর গ্যাংয়ের আশ্রয়দাতাকেও আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি কিশোর গ্যাংয়ের একজন ছাতা থাকেন, যিনি শেল্টার দেন। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, তাকেও আমরা স্পর্শ করব। সিএমপির মধ্যে অপরাধ করে কেউ আনটাচ থাকবে না।’

বিশ্বের উন্নত বিভিন্ন মহানগরীর মতো ‘সেফ সিটি’ ধারণার বাস্তবায়ন এবং একটি পূর্ণাঙ্গ মিডিয়া সেন্টার গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিন বছর আগে সিএমপিতে অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া সালেহ মোহাম্মদ তানভীর।

অনুষ্ঠানে সিএমপির তিন অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম, শ্যামল কুমার নাথ ও মোস্তাক আহমেদ এবং উপকমিশনার (সদর) আমীর জাফর উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম টপ নিউজ ট্রাফিক ডিভিশন মনিটরিং সিএমপি সিএমপি কমিশনার

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর