পাকিস্তানে সাইবার আইনে সাংবাদিক গ্রেফতার
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৩০
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, সরকার এবং ধর্মীয় চরমপন্থি দলগুলোর সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে, সাইবার অপরাধ আইনে গ্রেফতার হয়েছেন সাংবাদিক বিলাল ফারুকি। খবর বিবিসি।
এ ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে, অনলাইনে পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর পোস্ট এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে বিলালকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে, বার্তাসংস্থা রয়টার্সের হাতে থাকা পুলিশের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নিজের পোস্টে বিলাল ফারুকি সেনাবাহিনীকে অসম্মান করেছেন এবং হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে দেশবিরোধী নানা গুজব ছড়িয়েছেন।
এছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত তার পোস্টগুলো সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ উস্কে দিতে পারে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সম্প্রতি তার দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেছেন। কিন্তু, দেশটিতে গত কয়েকমাসে সরকার ও দেশটির প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর সমালোচনা করায় কয়েকজন সাংবাদিককে গ্রেফতার হতে হয়েছে।
এর আগে, জুলাইয়ে পাক সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বলায় সাংবাদিক, সমালোচক মতিউল্লাহ জানকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ধরে নিয়ে যায়। তার নিখোঁজ হওয়া নিয়ে সাংবাদিক ও আন্দোলনের কর্মীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ এবং সমালোচনা শুরু করলে কয়েক ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। যদিও, তার অপহরণের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
বিবিসি জানাচ্ছে, পাকিস্তানের সাইবার অপরাধ আইনে বিলাল ফারুকি দোষী প্রমাণিত হলে তার জরিমানা এবং দীর্ঘমেয়াদে কারাদণ্ড হতে পারে।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে অনলাইনে ধর্ম, দেশ, আদালত এবং সেনাবাহিনীকে নিয়ে সমালোচনা করলেই গ্রেফতার এবং বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। শুধুমাত্র ২০১৯ সালেই পাকিস্তানে খবর প্রকাশের কারণে অন্তত চারজন সাংবাদিক ও ব্লগারকে খুন হতে হয়েছে।
এর আগে, ২০১৯ সালে আরেক সাংবাদিক শাহজেব জিলানি প্রায় একই রকম অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু, পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে আদালত ওই মামলা খারিজ করে দেয়।
অপর দিকে, পাকিস্তানে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা নৃশংসতা ও নিপীড়ন নিয়ে এ সপ্তাহেই উদ্বেগ প্রকাশ এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয় হাই কমিশনার (ইউএনএইচআরসি)।