সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় নিরাপত্তা চেয়ে রাবির ৯ শিক্ষকের জিডি
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:০৯
রাবি: যেকোনো সময় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হতে পারেন— এমন আশঙ্কায় নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন শিক্ষক। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর মতিহার থানায় শিক্ষকরা জিডি করেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান।
নিরাপত্তা চাওয়া শিক্ষকরা হলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে অধ্যাপক আলী রেজা, সংগীত বিভাগের অধ্যাপক অসিত রায়, সাবেক প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক তরিকুল হাসান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মুজিবুল হক আজাদ খান, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এক্রাম উল্লাহ ও নাট্যকলা বিভাগের ফারুক হোসাইন।
তাদের প্রত্যেকেই বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষক স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সের শিক্ষক লাউঞ্জে সৌজন্যমূলক আলোচনা করছিলেন। সে সময়, মামুন নামের একজন বহিরাগত এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের সহকারী শিক্ষক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে কিছু সংখ্যক বহিরাগত ডিনস কমপ্লেক্সের সামনে পার্কিং করা শিক্ষকদের গাড়িগুলোর (নম্বর প্লেটসহ) গোপনে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করছে।
জিডিতে আরও উল্লেখ করা হয়, খবর পেয়ে দ্রুত লাউঞ্জ থেকে ডিনস কমপ্লেক্সের বাইরে আসলে দেখা যায়, তারা প্রত্যেকটি গাড়ির ছবি নিচ্ছে এবং ভিডিও ধারণ করছে। একপর্যায়ে তারা উপস্থিত শিক্ষকদের ছবি তোলে ও ভিডিও ধারণ করতে থাকে। এমতাবস্থায় ছবি নেওয়া ও ভিডিও ধারণের কারণ জানতে চেয়ে তাদের দিকে একসঙ্গে এগিয়ে গেলে তারা সেখান থেকে চলে যায়।
উল্লেখ্য যে, চলে যাওয়ার সময় তারা শিক্ষকদের লক্ষ করে আক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে এবং অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে।
এই ঘটনায় আমরা শঙ্কিত এবং আশঙ্কা প্রকাশ করছি যে, তাদের নেতৃত্বে আমাদের ওপর ব্যক্তিগত হামলা হতে পারে এবং পথে আমাদের গাড়িগুলোর ক্ষতি করা হতে পারে। এর আগে, মামুন নানাজনের প্ররোচনায় বিভিন্ন শিক্ষকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে এবং মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।
জিডিতে শিক্ষকরা উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সাময়িক ক্লাস বন্ধ থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে অবাধে বিচরণ কীভাবে সম্ভব এবং কেন করতে দেওয়া হচ্ছে, তা আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। এমতাবস্থায় উপরোক্ত আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটি যথাযথ তদন্তপূর্বক আমাদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধানের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
জিডির বিষয়ে জানতে চাইলে মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মজিবুল হক আজাদ খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে চিন্তার অধিকার আমাদের আছে। তবে কোথায় বসবো, কীভাবে বসবো তা নিয়ে বহিরাগত কেউ এসে ছবি তোলা ও নজরদারি করা অবশ্যই শঙ্কার ব্যাপার। যারা এসব কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদেরকে বর্তমান প্রশাসন চাকরির আশা দিয়ে রেখেছে বলে শিক্ষকদের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।