আশুলিয়ায় জমি দখলে গিয়ে লুটপাট, অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:৩৭
আশুলিয়া: আশুলিয়ায় শ্রমিক কলোনির জমি দখলের চেষ্টা ও ভাঙচুর লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাইদুর সম্রাট বাহিনীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ সময় ভাঙচুর করা হয় কাঁচাপাকা মিলিয়ে প্রায় ২০টি ঘর। লুট করা হয় স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১৫ লাখ টাকা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন।
আহতরা হলেন ভাড়াটিয়া লাল মিয়া (৬৫), ভাড়াটিয়া, জুয়েল মিয়া (৪৫), ভাড়াটিয়া মো. আবু বক্কার সিদ্দিক (৩১), ভাড়াটিয়া বরকত হোসেন (২৫)। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে আশুলিয়া ইউনিয়নের টঙ্গাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই জমির মালিক দাবিদার ফারহান মণ্ডল। তার জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে রশিদ ব্যাপারী। এক জমির দুই দাবিদার থাকায় ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উভয়পক্ষকে স্ব স্ব প্রমাণসাপেক্ষে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়। ফারহান মণ্ডল তার কাগজপত্র নিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান। এই সুযোগে রশিদ ব্যাপারীর পক্ষে জমিটি দখলের চেষ্টা চালান সম্রাট ও তার অনুসারীরা- এমন অভিযোগ ফারহান মণ্ডলের।
ঘটনার পর সেখানে খবর পেয়ে আসেন ফারহান মণ্ডলের আত্মীয় আশুলিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ মাতবর। তিনি বলেন, ‘আমি স্থানীয়দের সঙ্গে জানতে পেরেছি, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা সাইদুর রহমান সম্রাট ও ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পিন্টু মোল্লার নেতৃত্বে রশিদ বেপারী (৪৮), রাশেদ বেপারী (৩৫)সহ শতাধিক লোক হামলা চালায়।’
পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল এসে তিনজনকে আটক করে। বাকিরা পালিয়ে যায়। আটকেরা হলেন টেপা মাঝির ছেলে রশিদ ব্যাপারে (৪৮), আনসার বেপারীর ছেলে রাশেদ ব্যাপারী (৩৫)।
হামলায় আহত ভাড়াটিয়া লাল মিয়া জানান, হামলাকারীরা তার স্ত্রীর বেতনের টাকা ও সোনার গয়না নিয়ে যান হামলাকারীরা। এ সময় বাধা দিলে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার হাত ভেঙে দেওয়া হয়।
ভাড়াটিয়া বোরহান উদ্দিন জানান, তিনি ব্যবসার চার লাখ টাকা ঘরে রেখেছিলেন। হামলাকারীরা সব টাকা নিয়ে গেছে। এ সময় বাধা দিলেও তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
ফারহান মণ্ডল সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই জমির মালিকানা আমার। জমিটি আমি ভোগদখল করে আসছি। প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র আমার আছে। তারপরও ভূমিদস্যুরা আমার জমিটির দিকে কুনজর দিয়েছে।’
এ বিষয়ে মুঠোফোনে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সাইদুর রহমান সম্রাটের বক্তব্য নিতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জিয়াউল হক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান আশুলিয়া থানা পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনার ছাত্রলীগ নেতা সম্রাটের সম্পৃক্ততা আছে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘আমরা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছি। সেটি যাচাই-বাছাই চলছে। এ ছাড়া মামলা দায়েরের প্রস্তুতি হচ্ছে। মামলা হওয়ার পর তদন্তসাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে।’