আশুলিয়ায় অস্ত্র ও গুলিসহ সন্ত্রাসী আটক
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:৪০
সাভার (ঢাকা): সাভারের আশুলিয়ায় অস্ত্র ও গুলিসহ এক সন্ত্রাসীকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব-৪)। আটক রিয়াজুল ইসলামের (৩৬) নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে। রিয়াজুল আশুলিয়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকা থেকে তাকে আটক করে সাভার নবীনগর র্যাব-৪।
র্যাব-৪ জানায়, আটক সন্ত্রাসী রিয়াজুল ইসলাম আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। পরে আজ ভোরে তাকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করা হয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, রিয়াজুল অস্ত্রধারী হওয়ায় সাধারণ মানুষরা তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলতে সাহস করত না। কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করলে অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখাত। র্যাব-৪-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার উনু মং বলেন, আটক সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
জানা যায়, আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত রিয়াজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিশু ও নারী ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ভুয়া ডিবির পরিচয় জমি দখল, ফুটপাত দখল, যাত্রী ছাউনী দখল করে ছোট ছোট দোকান করে অগ্রিম নিয়ে ভাড়া দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, আশুলিয়ার নবীনগর থেকে পল্লী বিদ্যুৎ বাইপাইল ডিইপিজেড শ্রীপুর পর্যন্ত প্রতিদিন ১০০ টাকা করে ফুটপাত থেকে ভাড়া তোলেন রিয়াজুল ইসলাম। ফুটপাতের এই চাঁদাবাজির বিষয় নিয়ে এর আগে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করতে গেলে সারাবাংলার প্রতিবেদক শরিফ শেখকে মোবাইলে দেখে নেওয়া ও হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন রিয়াজুল, যার কল রেকর্ড সংরক্ষিত আছে।
রিয়াজুলের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, ধর্ষণের অভিযোগও রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সবশেষ গত আগস্ট মাসে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকা থেকে এক কিশোরীকে তুলে এনে সহযোগীদের নিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করেন রিয়াজুল। ওই ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের হলে পুলিশ তাকে ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে। পরে রিয়াজুল জামিনে মুক্ত হন।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, এর আগেও আশুলিয়ার শ্রীপুর এলাকায় চাঁদাবাজির মামলায় আটক হয়েছিলেন রিয়াজুল। পল্লী বিদ্যুতের কবরস্থান রোড এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় পুলিশ হাতেনাতে আটক করে তাকে। বাইপাইল এলাকার কাঁচাবাজার মার্কেট দখল করতে গিয়েও পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন রিয়াজুল। তবে বারবারই রহস্যজনকভাবে ছাড়া পেয়ে বাইরে বেরিয়ে ফের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে খুলনা রুপসা ঘাট থেকে চুরি করতে গিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে গণধোলাই খেয়ে আশুলিয়া পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় এসে অবস্থান নেন রিয়াজুল। রিকশা চালানোর মাধ্যমে এই এলাকায় থিতু হতে শুরু করেন। এরপর স্থানীয় কয়েকজন তথাকথিত নেতার ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম শুরু হয় রিয়াজুলের। একপর্যায়ে গোটা এলাকার ত্রাসে পরিণত হন।