Thursday 17 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছনের ডালায় স্বপ্ন বুনছে নারীরা, লাভবান মধ্যসত্ত্বভোগী


১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৮:৪২
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বগুড়া: জেলার শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রাম। রাস্তার পাশ দিয়ে যেতেই দেখা যায়, ৮ থেকে ১০ জন মহিলা গোলাকার হয়ে বসে ছন দিয়ে ডালা বুনছেন। তাদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি বিভিন্ন প্রকার ছনের ডালা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশে। তবে বড় অঙ্কের টাকা-পয়সার বিষয় থাকলেও লাভের সিংহভাগই যাচ্ছে মধ্যসত্ত্বভোগীদের পেটে।

নারীরা জানান, এই ছনের ডালা বুনেই সংসারের অভাব ঘোচাতে চান। সেই স্বপ্ন নিয়েই এইসব ডালা বুনে চলছেন তারা। বর্তমানে সংসারের কাজের পাশাপাশি এ কাজ করে জনপ্রতি মাসে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা আয় করছেন। তবে পুঁজি না থাকায় অন্যের সঙ্গে চুক্তিতে কাজ করতে হচ্ছে। এতে লাভের খুব অল্প অংশই পাচ্ছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

শুধু গোপালপুর নয়, উপজেলার হাপুনিয়া, টুনিপাড়া, খামারকান্দি, গাড়িদহ, কেল্লা, ভাতারিয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের শতশত নারীরা ছনের ডালা বুনে সংসারের উন্নতির জন্য তাদের স্বামীকে সহযোগিতা করছেন। গোপালপুর গ্রামের সামছুল শেখের মেয়ে তারা বানু জানান, ছোট বড় ৪টি ডালা মিলে ১টি সেট হয়। সেই একসেট ডালা বুনে তারা ৪৫০ টাকা পান। প্রতি সপ্তাহে একজনের পক্ষে ২ সেট ডালা বোনা সম্ভব বলেও জানান তিনি।

আলম আকন্দের স্ত্রী আন্না খাতুন, তাহের আকন্দের স্ত্রী কুলসুম বেগম বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। আমাদের টাকা-পয়সা নাই। তাই অন্যের কন্ট্রাকের কাজ করি। করোনাভাইরাসের কারণে ছেলে-মেয়েদের স্কুল বন্ধ থাকায় তারা আমাদের সহযোগিতা করছে বলেই একটু বেশি ডালা বুনতে পারতেছি। তাছাড়া যাদের কাজ করি তারা আমাদের সপ্তাহের টাকা সপ্তাহে দিতে পারে না। তাতে আমাদের খুব সমস্যা হয়। সরকার যদি আমাদের জন্য সরাসরি কাজের ব্যবস্থা করতো তাহলে আমরাও স্বাবলম্বী হতাম।’

এ ব্যাপারে কন্ট্রাক্টর আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের নিজের টাকায় ডালার জিনিসপত্র কিনতে হয়। তাই মাঝে মাঝে উদ্যোক্তা নারীদের সপ্তাহের টাকা সপ্তাহে দিতে পারি না। তাছাড়া যাদের সরকারি সুবিধা পাওয়ার কথা তারা পায় না। সরকারি সুবিধা পাচ্ছে ঢাকার বড় বড় মহাজনরা। অথচ যাদের হাতের ছোঁয়ায় দেশের এই প্রাপ্তি তারা হচ্ছে বঞ্চিত।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ বলেন, ‘এই উপজেলায় যারা নারী উদ্যোক্তা আছেন তাদের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা প্রশিক্ষণ পায়নি তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।’ সরকারিভাবে যেসব প্রকল্প দেওয়া হয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উদ্যোক্তাদের মাঝে তা বণ্টন করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

ছনের ডালা নারী উদ্যোক্তা মধ্যস্বত্বভোগী রফতানি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর