Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জবানবন্দি গ্রহণের সময় আইনজীবীর উপস্থিতি চেয়ে আবেদন


১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:৫৮

ঢাকা: পুলিশ রিমান্ড ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার সময় আইনজীবীর উপস্থিতি চেয়ে হাইকোর্টে মৌখিকভাবে আবেদন করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের স্কুলছাত্রী জীবিত থাকার পরও তাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামিদের স্বীকারোক্তি আদায়ের যৌক্তিকতা নিয়ে দায়ের করা মামলার শুনানির সময় এই আবেদন জানান আইনজীবী।

বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ‍শুনানি শেষে আদালত এ বিষয়ে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর আদেশের জন্য দিন ঠিক করে দিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণ করে গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আসামিদের স্বীকারোক্তি আদায়-সংক্রান্ত জবানবন্দি গ্রহণের কার্যক্রমের বৈধতা ও যৌক্তিকতার প্রশ্ন তুলে আবেদন (রিভিশন) করা হয়।

ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারিক আদালতের সব রেকর্ড ও মামলার দুই তদন্তকারী কর্মকর্তাকে (আইও) তলব করেন হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে এদিন সকাল ১০টায় দুই তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টে উপস্থিত হন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী। আর দুই তদন্তকারী কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মুনসুরুল হক চৌধুরী।

শুনানির সময় আদালত বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো নজির নেই, যেখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসামি দোষ স্বীকার করেছে। সেখানে ধর্ষণ ও হত্যা না করেও আসামিরা কিভাবে স্বীকার করলো— এটা বড় খটকা। আসামি ধরেই মিডিয়ার সামনে কেন আনা হয়— এ সময় তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আদালত।

মামলার শুনানিতে আদালত বলেন, আসামি গ্রেফতারের পর বিচার শেষ হওয়ার আগেই ব্রিফিং করে মিডিয়ার সামনে আনা বিচারকে প্রভাবিত করার সমান। কোনো বিষয়ে তদন্ত চলার পর রিপোর্ট দেওয়ার আগেই ঘটনা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিডিয়ার সামনে কথা বলেন, যা অনুচিত বলেও উল্লেখ করেন আদালত। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসামিদের সামনে নিয়ে এলে গণমাধ্যম তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করবেই— এটিও বলেন আদালত।

এ সময় আইনজীবী শিশির মনির শুনানিতে বলেন, আমেরিকা, ভারত, নেদারল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আসামির জবানবন্দি গ্রহণ করার সময় আইনজীবীর উপস্থিতি থাকে বা আইনজীবীর মাধ্যমে জবানবন্দি নেওয়া হয়। দেশেও ১৬৪ ধারায় আসামির জবানবন্দি গ্রহণ করার সময় আইনজীবীর মাধ্যমে বা উপস্থিতি থাকা উচিত।

গত ৪ জুলাই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী দিসা নিখোঁজ হয়। এরপর ৬ আগস্ট নিখোঁজ স্কুলছাত্রীর বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ আব্দুল্লাহ, রকিব ও খলিল নামে তিন জনকে গ্রেফতার করে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। স্বীকারোক্তিতে তারা বলে, তারা দিসাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। জবানবন্দি গ্রহণের পর আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু ২৩ আগস্ট দিসাকে খুঁজে পাওয়া গেছে। সে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, আসামিরা কীভাবে ধর্ষণ ও হত্যা সম্পর্কিত স্বীকারোক্তি দিয়েছে?

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।

আইনজীবীর উপস্থিতি জবানবন্দি মৌখিক আবেদন রিমান্ড স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর