বিস্ফোরণের দায় ২ গ্রাহক ও মসজিদ কমিটির ওপরে চাপালো তিতাস
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৮:৪০
ঢাকা: মসজিদ কমিটি ও দু’জন গ্রাহকের কারণেই নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। সংস্থাটির তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মসজিদ নির্মাণের সময় রাজউক, তিতাস, বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কারও অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জে বায়তুস সালাত মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা গঠিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিশন কোম্পানি লিমিটেড গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
এসময় এ ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে আশ্বাস দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনার দায় কেউ এড়াতে পারবে না। ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটতে পারে, সেজন্য সবাইকে তৎপর থাকতে হবে।
তিতাসের ১৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় তিতাসের এককভাবে দায় নেই। তবে সমষ্টিগতভাবে অনেকেই দায় এড়াতে পারেন না। নিয়ম বহির্ভূতভাবে দু’জন গ্রাহক রাইজার স্থানান্তর করেছেন, গ্যাস লাইনের কাছে ও নিচে মসজিদ কমিটির অনুমোদনহীন ভিত্তি স্থাপনে পাইপের উপরিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়েছে, বন্ধ মসজিদের ভেতরে গ্যাসের গন্ধ থাকার পরেও মসজিদ কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেয়নি— এই বিষয়গুলোকেই দায়ী করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
এতে সুপারিশে বলা হয়েছে, এখন থেকে তিতাসের পাইপলাইনের ওপরে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। কারণ এতে গ্যাসের পাইপলাইনেরও ক্ষতি হতে পারে। আর লিকেজের সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে যেন তিতাসকে জানানো হয়।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় এরই মধ্যে তিতাসের ফতুল্লা অফিসের আট জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ডিপিডিসি’র সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আরও তদন্ত চলছে। অবৈধ সংযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ডিপিডিসি মামলা করেছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবহেলার বিষয়টি গভীরভাবে যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দেওয়ার কাজ সফলতার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। চলমান এই কাজে কোনো ধরনের দুর্নীতি ও গাফলতি সহ্য করা হবে না। তিতাসের প্রতিবেদন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে, গত ৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে এশার নামাজ আদায়ের সময় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণ থেকে আগুন লাগে। বিস্ফোরণের পর ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দগ্ধ অবস্থায় ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩১ জন মারা গেছেন। একজনকে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি পাঁচ জন এখনো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।
ওই ঘটনায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আব্দুল ওয়াহাব তালুকদারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিতাসের পাশাপাশি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল ডিপিডিসিও। তারা তাদের প্রতিবেদন জানিয়েছিল, মসজিদে দু’টি বিদ্যুৎ লাইন রয়েছে, যার একটি অবৈধ।
তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন তিতাস বায়তুস সালাত মসজিদ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী মসজিদে বিস্ফোরণ