Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সদিচ্ছার সংকটে মিলছে না অগ্নিদুর্ঘটনার কার্যকরী সমাধান: বিআইপি


১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:১২

ঢাকা: দেশে বিদ্যমান অগ্নিদুর্ঘটনার জন্য বিভিন্ন সংস্থার উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)। সংগঠনটি বলছে, সমস্যা চিহ্নিত হয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু আন্তরিক সদিচ্ছার অভাবেই মিলছে না সমস্যার কার্যকরী সমাধান।

শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিআইপি আয়োজিত ওয়েবিনারে ‘নগরীতে অগ্নিঝুঁকি ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক একটি কনফারেন্সে এই মত দেন বিআইপির নেতা ও নগর পরিকল্পনাবিদরা।

বিজ্ঞাপন

কনফারেন্সে সংগঠনটির নেতান্দরা বলেন, ‘নিমতলীর অগ্নিকাণ্ড, চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ড, এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড এবং সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জের অগ্নিকাণ্ড। সবগুলো অগ্নিকাণ্ডই একই বৃত্তে ঘটে যাওয়া নতুন মোড়কে পুরোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি। কিন্তু এ প্রতিটি সমস্যার সুনির্দিষ্ট সমাধানের পথ আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ শুধুমাত্র আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এসব নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। এ কাজটির জন্য যেটি বেশি প্রয়োজন সেই সদিচ্ছাটুকুই নেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর।’

কনফারেন্সে বিআইপি সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেখানে সমস্যার কারণ ও সমাধানের জন্য বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, অপরিকল্পিত নগরায়ন, ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনার অনুপস্থিতি, পরিকল্পনার মান গুলোর সীমিত অনুশীলন, অধিক জনঘনত্ব, প্রাকৃতিক জলাধার ও পুকুরের অভাব, ত্রুটিপুর্ণ বিল্ডিং কাঠামো, কাঠামোর অতি ঘন অবস্থান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, পর্যাপ্ত আগুন সুরক্ষা এবং জরুরী প্রস্থানের বিধান ছাড়াই উচ্চতর ভবন নির্মাণ, অপর্যাপ্ত প্রবেশ-বাহির এবং ব্যবহার অনুপযোগী সরু রাস্তা, অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবই অগ্নি দুর্ঘটনার বড় কারণ।

বিজ্ঞাপন

উপস্থাপিত প্রবন্ধে অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরে ড. আদিল জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি অনুযায়ী ভূমি ব্যবহার জোনিং করা, অননুমোদিত কাঠামোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, রাস্তা প্রশস্তকরণ, ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ সহ পরিকল্পিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, অত্যন্ত দহনযোগ্য রাসায়নিকের স্টোরগুলি অন্যত্র স্থানান্তরিত করা, আবাসিক অঞ্চল থেকে রাসায়নিক স্টোর এবং দোকানগুলি স্থানান্তর করা, রাসায়নিক ও জ্বলনযোগ্য পদার্থ এবং বিপজ্জনক রাসায়নিকের গুদামসহ ভবনগুলির ইউটিলিটি পরিষেবাগুলি- জল, গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ করা, বিপজ্জনক রাসায়নিক ব্যবসা এবং গুদামগুলিকে স্থানান্তরিত করা আবাসিক অঞ্চলে রাসায়নিক এবং পেট্রোলিয়াম পণ্য সংরক্ষণ এবং সংরক্ষণের জন্য সমস্ত লাইসেন্স বাতিল করা, রাসায়নিক দোকান বা গুদামগুলির জন্য নতুন লাইসেন্স প্রদান বা পুরাতনগুলি পুনর্নবীকরণ না করার মধ্য দিয়ে অগ্নি দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

অনুষ্ঠানে বিআইপির সভাপতি অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, ‘২০১০ সালে নিমতলির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে তদন্ত কমিটি রাসায়নিক গুদামগুলিকে পুরান ঢাকা থেকে সরানোর পরামর্শ দিয়েছিল। তবুও এই ধারণাগুলো কেবল কাগজে রয়ে গেছে। পুরাতন বিল্ডিংগুলিতে সস্তা ভাড়া এবং কম রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের কারণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ী উভয়ই তা মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে। বিল্ডিংগুলি প্রায়শই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে ব্যবহৃত হয় এবং সর্বাধিক সাম্প্রতিক সুরক্ষা কোডগুলি অনুসরণ করে নির্মিত হয় না।’ ফলে এগুলো প্রাকৃতিক বা অন্য যেকোনও দুর্যোগের ক্ষেত্রে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলেও জানান তিনি।

অগ্নিদুর্ঘটনা বিআইপি সমস্যা চিহ্নিত

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর