চমেক হাসপাতাল থেকে দালাল উৎখাতের সিদ্ধান্ত
২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৩০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে দালালদের উৎপাত বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দালালদের উৎখাতে পুলিশ কমিশনারের সহযোগিতা চাওয়ার পাশাপাশি হাসপাতালের স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মচারীদের জন্য পোশাক নির্ধারণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যবস্থাপনা কমিটি। দালালদের জন্য চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের হয়রানির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) চমেক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় দালাল উৎখাতের পাশাপাশি আরও বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে এতে সভাপতিত্ব করেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি স্থানীয় সাংসদ ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এছাড়া হাসপাতালের সভাকক্ষে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর, চমেকের অধ্যক্ষ শামীম হাসান, উপাধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রামের সভাপতি মুজিবুল হক খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দিনসহ অন্যান্য সদস্যরা।
সভায় উপস্থিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের বিভিন্ন ওষুধের দোকান ও রোগ নিরূপণী কেন্দ্রের নিয়োগ করা দালালদের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি সভায় উঠে আসে। উপমন্ত্রী নওফেল এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে সিএমপি কমিশনারের সহযোগিতা চাওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। এছাড়া দালালদের উৎপাত বন্ধে তাদের সহজে চিহ্নিত করার জন্য হাসপাতালের স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মচারীদের জন্য পোশাক নির্দিষ্ট করা ও আইডি কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়।
এছাড়া হাসপাতালের আশপাশের এলাকা থেকে হকার উচ্ছেদ, দায়িত্বরত আনসার সদস্যের সংখ্যা ১০০ জন থেকে বাড়িয়ে ১৫০ জন করা এবং দর্শনার্থী প্রবেশে শৃঙ্খলা আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। এছাড়া চমেক হাসপাতালের বেহাত হওয়া ভূসম্পদ উদ্ধারে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। এতে প্রধান করা হয়েছে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকে। বাকি চার সদস্য হলেন- হাসপাতালের উপ-পরিচালক আফতাবুল ইসলাম, চমেকের উপাধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন মাহমুদ, বিএমএ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন।
জানতে চাইলে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘দালাল উৎখাতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। মন্ত্রী মহোদয় নিজেই এ ব্যাপারে সিএমপি কমিশনারকে সহযোগিতার জন্য বলবেন। হাসপাতালের বিপুল সংখ্যক ভূমি বেদখল হয়ে আছে। দলিলপত্রেও কিছু ত্রুটি আছে। একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি রেকর্ডপত্রে ত্রুটি সংশোধন করে বেদখল হওয়া ভূমি উদ্ধার, সীমানা নির্ধারণ করে হাসপাতালকে সুরক্ষিত করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।’
গত ২০ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী-বাকলিয়া আসনের সাংসদ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর আগে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। নওফেল দায়িত্ব পাবার পর রোববার ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হলো।