এসআর গ্রুপের হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে ২০০ কোটি টাকার বিক্রয় গোপন
২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:৪৮
ঢাকা: এসআর গ্রুপের মালিকানাধীন দুটো হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকা প্রকৃত বিক্রয়ের তথ্য পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা বিভাগ। যা ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার জন্য গোপন করা হয়েছিল।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান সারাবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভ্যাট গোয়েন্দা নিকুঞ্জ-১ এলাকার এসআর গ্রুপের হেড অফিসে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বাণিজ্যিক হিসাবপত্র জব্দ করে। এসব জব্দকৃত কাগজপত্র যাচাই করে ভ্যাট গোয়েন্দারা দেখতে পায় উত্তরবঙ্গে প্রতিষ্ঠানের দুটো হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করছে। সেগুলোর মধ্যে আছে- ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বগুড়ার শেরপুরে ‘ফুড ভিলেজ লিমিটেড‘ ও অন্যটি ‘ফুডভিলেজ প্লাস’ একই মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে অবস্থিত।
সিরাজগঞ্জ ভ্যাট সার্কেলের তথ্যে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ থেকে জুলাই ২০২০ পর্যন্ত ৩ বছর ৬ মাসে ফুড ভিলেজ প্লাস রেস্টুরেন্টে বিক্রয় প্রদর্শন করেছে ২৩ কোটি ১ লাখ টাকা। এর বিপরীতে ভ্যাট পরিশোধ করা হয়েছে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কাগজে দেখা যায় প্রকৃত বিক্রয়ের পরিমাণ ১২৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ফুড ভিলেজ প্লাস এই সময়ে বিক্রয় গোপন করেছে ১০০ কোটি টাকা। এখানে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ বর্তায় ৪ কোটি ৭ লাখ টাকা।
অন্যদিকে, একই মালিকানাধীন ফুড ভিলেজ লিমিটেড ফেব্রুয়ারি ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত ৩ বছর ৫ মাসে মাসিক ভ্যাট রিটার্নে বিক্রয় দেখানো হয়েছে ২৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এতে ভ্যাট দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। তবে ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযানে এই সময়ে ফুড ভিলেজ লিমিটেডের প্রকৃত বিক্রয় ১২২ কোটি ২২ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এই তথ্য গোপন করায় ফুড ভিলেজ লিমিটেড কর্তৃক ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে ৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এতে সুদ আরোপযোগ্য হয়েছে ৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
দুটো রেস্টুরেন্টে প্রকৃত বিক্রয় গোপন করা হয়েছে মোট ১৯৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ভ্যাট রিটার্নে এসআর গ্রুপ প্রায় ৭২ শতাংশ তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এই অসৎ উপায়ে তথ্য গোপন করায় সরকার এই দুই রেস্টুরেন্ট থেকে ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকার ভ্যাট থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রেস্টুরেন্ট দুটো মূলত ঢাকা-রংপুর হাইওয়েতে বাসের যাত্রীদের খাবার পরিবেশন করে। এতে নন-এসি, এসি ডিলাক্সে খাবার বিক্রয় এবং একটি কর্নারে মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় পণ্য বিক্রি করা হয়।