নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি মোবারক হোসেন। জবানবন্দিতে ওই মসজিদের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। মোবারককে এর আগে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) পশ্চিম তল্লা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওছার আলমের আদালতে মোবারক হোসেনের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয়। জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক বাবুল হোসেন জানান, মসজিদে বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ স্পার্ক করে জমাট বেঁধে থাকা গ্যাসের মিশ্রণ থেকে বিস্ফোরণের সূত্রপাত ঘটেছিল। বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ দিয়েছিলেন মোবারক হোসেন। আদলতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি তার দোষ স্বীকার করেছেন।
বায়তুস সালাত মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রোববার সকালে গ্রেফতারের পর মোবারক হোসেনকে আদালতে হাজির করে সিআইডি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের পর মোবারক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে তাকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে জবানবন্দি নেওয়া হয়।
এদিন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মোবারক হোসেনের পক্ষে জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। জবানবন্দি দেওয়া শেষ হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে, এই মামলায় তিতাসের চার কর্মকর্তাসহ গ্রেফতার আট জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। রিমান্ড শেষে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) তাদের আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে এশার নামাজের সময় বায়তুস সালাত মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটলে উপস্থিত মুসল্লিদের প্রায় সবাই দগ্ধ হন। এর মধ্যে ৩৭ জনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে ৩৪ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। একজনকে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি দু’জন এখনো চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে তাদের ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিস্ফোরণের ঘটনার পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা থানা পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে সিআইডি।