দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্ক থাকার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:৫১
ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শীতকালে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। তাই এখন থেকেই সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মনে রাখতে হবে করোনা আছে এবং তা শীতকালে বাড়তে পারে।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা অতীতে বা করোনার শুরুতে যেমন সতর্ক ছিলাম এখনও একই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার আরও কম হতো যদি দেশের মানুষ ব্যাপকভাবে করোনা পরীক্ষা করাতো।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে অনেক আলোচনা সমালোচনা সত্ত্বেও যদি পরিসংখ্যানের দিকে তাকাই তাহলে দেখা যায়, করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে আমরা অনেক দেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছি। সারাবিশ্বে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬৭৬ জন আক্রান্ত। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখ ৭৫ হাজার ৪৭১ জনের অর্থাৎ ২.৮০ শতাংশ। বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ১.৪ শতাংশ, ভারতে ১.৫৯, পাকিস্তানে ২.০৯, যুক্তরাজ্য ১০.৩৬, বেলজিয়াম ৯.৪৬, ফ্রান্সে ৬.৭১, জার্মানিতে ৩. ৪২, যুক্তরাষ্ট্রে ২.৮৯ শতাংশ।
এর আগে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. জাহিদ মালেক দ্বিতীয় দফায় করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।
দ্বিতীয় ধাপে করোনা ঝুঁকি এড়াতে সচেতন হতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার আরও কম হতো যদি দেশের মানুষ ব্যাপক হারে পরীক্ষা করতো। পরীক্ষার হার নিয়ে আমি বলতে চাই বাংলাদেশে যে পরিমাণ পরীক্ষা করা হচ্ছে সেটা জাপানের কাছাকাছি। জাপানের জনসংখ্যার অনুপাতের যে পরিমাণ পরীক্ষা হয় তার থেকে একটু কম আছে বাংলাদেশে। অর্থাৎ করোনা মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে আমরা অনেক দেশের তুলনায় ভালো আছি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মাহামারির এই সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখে এশিয়ার প্রায় সব দেশকে পেছনে ফেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে ৫.২ শতাংশ অর্জন করেছে। সেটা প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বের কারণে সম্ভব হয়েছে। এই করোনার মধ্যে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে আমাদের রফতানির প্রবৃদ্ধি বিগত বছরের তুলনায় বেশি। এই প্রবৃদ্ধি জুলাই মাসে গতবছরের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। এটা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও নানা ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার কারণে। পাশাপাশি এই দুর্যোগ মোকাবেলায় মানুসকে সাহস দেয়া ও সস্পৃক্ত করার জন্য। বাংলাদেম আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সম্পৃক্ত করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কারণে সম্ভব হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে প্রচারণা ও সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। সেক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়াতে তথ্য মন্ত্রণালয় কী প্রস্তুতি নিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আমরা প্রথম থেকেই কাজ করছি। করোনা পৃথিবীতে দেখার পর থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নানা প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সেই প্রচার শুধু সরকারি প্রচার যন্ত্রের মাধ্যমে করা হচ্ছে তা নয়। আমরা বেসরকারি টেলিভিশন ও পত্র-পত্রিকাগুলোকে আহ্বান জানিয়েছিলাম। সেক্ষেত্রে তারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। তারা নিজেরাও অনেক প্রচার করেছে।
তিনি বলেন, করোনা কখন যাবে আমরা সেটা কেউ জানি না। শীতকালে বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা দেখেছি ডিসেম্বর মাসে যখন করোনা দেখা দিয়েছিল তখন যে সমস্ত দেশে শীত ছিল বেশি সেসকল দেশে বেশি মানুষ মারা গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও একথা বলেছে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে জনগণকে ওয়াকিবহাল করেছেন। মনে রাখতে হবে করোনা আছে এবং তা শীতকালে বাড়তে পারে। স্বাস্থ্যবিধি আমাদের সবার মেনে চলা প্রয়োজন।