চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দরে কয়েকটি পদে নিয়োগে চট্টগ্রামের প্রার্থীদের বাদ দেওয়ার অভিযোগ এনে মানববন্ধন হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের ‘নিয়োগবঞ্চিত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাদের অভিযোগ, গোপনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এই ‘বিতর্কিত’ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন সংহতি প্রকাশ করে নগর ছাত্রলীগ। তবে বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই ধরনের কোনো গোপন নিয়োগ প্রক্রিয়ার খবর তাদের জানা নেই।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘২০১৭ সালে কম্পিউটার অপারেটর ও সহ-সময়রক্ষক পদে আবেদন ও পরীক্ষা গ্রহণ করে তিন বছর ধরে চূড়ান্ত নিয়োগ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ১২১টি পদের জন্য সেসময় ২৩ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। ৮৯২ জন লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছেন। কম্পিউটার টেস্ট ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। অথচ তিন বছর ধরে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছে না।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘অতিসম্প্রতি আমরা খবর পেয়েছি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৭২ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছে, যার মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের কেউ নেই। এদেরকেই নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন্দর, যা খুবই দুঃখজনক এবং বৈষম্যমূলক। চট্টগ্রামের মাটিতে বন্দর আর নিয়োগের সময় চট্টগ্রামকে বাদ দেওয়া হবে— এই বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না।’
অবিলম্বে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল না হলে বন্দর ভবন ঘেরাওসহ বৃহত্তর আন্দোলনের দেওয়া হবে বলে মানববন্ধনে ঘোষণা দেন ছাত্রলীগের নেতারা।
এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘কিছু লোক একটা মানববন্ধন করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। কিন্তু বুঝতে পারছি না, বন্দরের অভ্যন্তরীণ গোপনীয় বিষয় উনারা কিভাবে জানলেন? চট্টগ্রামের প্রার্থীদের বাদ দেওয়ার কথা যেটা বলা হচ্ছে, সেটা আমরাই জানি না। কারণ এই নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল এখনো বন্দরের ওয়েবসাইট, নোটিশ বোর্ড কিংবা সংবাদপত্র— কোথাও প্রকাশ করা হয়নি। তাহলে উনাদের কাছে বিষয়টি কিভাবে গেল? আদৌ এর কোনো সত্যতা আছে কি না, আমরা জানি না।’
জানতে চাইলে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘বন্দরের সিবিএ’র কাছ থেকে নিয়োগবঞ্চিতরা ও আমরা বিষয়টি জেনেছি। নিয়োগবঞ্চিতরা নিজেরাই আন্দোলনে দাঁড়িয়েছিলেন। খবর পেয়ে আমরা গিয়ে তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছি। আমরা চট্টগ্রামের ছাত্র-জনতা চট্টগ্রামকে বঞ্চিত করার এই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই মানবো না। অবিলম্বে এই ষড়যন্ত্র বন্ধ না করলে বন্দর ভবন ঘেরাওসহ কঠোর আন্দোলন হবে।’
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সুমন দাশ, আমিনুল ইসলাম ও শারমিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু, সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, সহসভাপতি ফখরুল আহম্মেদ পাভেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চৌধুরী বাবু, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক কবির আহম্মেদ, বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান বাবু, সহসভাপতি রাজিব কুমার শীল, আরিফুল ইসলাম আরিফ, রাফসান জামিল, রাহাত ইমরান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ও রন্টু দাশ।