‘করোনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের উভয় সংকটে বিশ্বের ৫ কোটি মানুষ’
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১০:৩২
প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং করোনা মহামারির উভয় সংকটে বিশ্বজুড়ে অন্তত পাঁচ কোটি মানুষ নাজেহাল দশায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে – আন্তর্জাতিক মানবিক এজেন্সি রেডক্রসের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্স।
রেডক্রসের তরফ থেকে এক নতুন বিশ্লেষণে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীনই, জলবায়ুর চরমভাবাপন্নতাসৃষ্ট ১৩২টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামলেছে পৃথিবী।
বিশ্বব্যাপী বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়ে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে পাঁচ কোটি ১০ লাখ মানুষ। এছাড়াও মৃত্যু হয়েছে আরও তিন হাজার পাঁচশ মানুষের। পাশাপাশি, করোনার ভুক্তভোগী এবং মৃত্যু মিছিল তো রয়েছেই – সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিজের (আইএফআরসি) প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সেস্কো রোসসা।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক এই মানবিক এজেন্সিকেও একই সময় দুই ধরনের মানবিক বিপর্য্য মোকাবিলা করতে হয়েছে।
রেডক্রসের ক্লাইমেট সেন্টারের সঙ্গে যৌথভাবে প্রকাশিত এই রিপোর্টে আইএফআরসি জানাচ্ছে, কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে শারীরিক দূরত্ব মেনে দুর্যোগ উপদ্রুতদের সরিয়ে নেওয়া ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ।
এছাড়াও, মহামারির কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাড়া দেওয়ার সময় কখনো কখনো ফ্রন্টলাইন স্বেচ্ছাসেবকের সংকটে পড়তে হয়েছে। লকডাউনের কারণে সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্টেও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, ধসের মুখে থাকা অর্থনৈতিক বাস্তবতায় মানবিক সহযোগীতার তহবিলের পরিমাণ কমে যাওয়া – বলে জানিয়েছে রেডক্রস।
এদিকে, এই দ্বৈত বৈশ্বিক সংকটে পতিত চার কোটি মানুষই বাংলাদেশ ও ভারতে যুগপৎ করোনা ভাইরাস এবং মৌসুমী বন্যা-ঝড়ের ভুক্তোভোগী।
অন্যদিকে, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকাজুড়ে করোনা মহামারির সঙ্গে প্রকট হয়েছে তাপদাহ। শিশু, বয়স্কসহ দ্বৈত সংকটে লাখ লাখ মানুষ ভুক্তভোগী হয়েছে। একদিকে, তাপদাহের হাত থেকে বাঁচতে সবাইকে কম কাপড় পরার নির্দেশনা। অপরদিকে, করোনার হাত থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার – অধিবাসীদের গভীর সংকটে ফেলে দিয়েছিল বলে রেডক্রস উল্লেখ করেছে।
পাশাপাশি, তাপদাহ থেকে উদ্ধারকৃতদের জন্য কুলিং সেন্টার এবং আশ্রয়কেন্দ্রের সংখ্যাও মহামারির মধ্যে ছিল অপ্রতুল।
কেবলমাত্র, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টকোস্টেই দাবানল এবং মহামারির কবলে পড়েছে দুই মিলিয়ন মানুষ।
অন্যদিকে, এ ধরনের মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবকদের স্বপ্রণোদিত অংশগ্রহণকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন আইএফআরসি প্রেসিডেন্ট।
তবে, জাতিসংঘে নিযুক্ত রেডক্রসের স্থায়ী পর্যবেক্ষক রিচার্ড ব্লেউইট বলেছেন – মানবিক বিপর্যয়ে সাড়াদানে তহবিল সংকুচিত হয়ে আসছে। যা আন্দোলনের গতি ধীর করে দিয়েছে বলে তিনি মত দিয়েছেন।
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস-রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিজ (আইএফআরসি) করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ জাতিসংঘ রেডক্রস