স্বামী হাসপাতালে ভর্তি, রক্ত জোগাড়ে গিয়ে ‘ধর্ষণের শিকার’ স্ত্রী
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:৫৯
ঢাকা: রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুর্মূষু স্বামীর রক্তের জন্য এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করছিলেন এক স্ত্রী। এমন সময় মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব নামে একজন রক্ত ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। আর এ সুযোগে ওই নারীকে হাসপাতাল থেকে একটি বাসায় নিয়ে অন্য নারীর সহায়তায় ‘ধর্ষণ’ করেন সজীব।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী র্যাব-২ এর কার্যালয়ে অভিযোগ দেওয়ার পর মাঠে নামে র্যাব। অভিযান চালিয়ে সজীব ও তাকে সহায়তাকারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাবের টিম।
শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-২ এর উপ-অধিনায়ক মেজর এইচ এম পারভেজ আরেফিন।
ভিকটিমের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রক্ত জোগাড় করে দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে ১৫ সেপ্টেম্বর। ওইদিন বিকেলে শান্তা আক্তারের (ছদ্মনাম) স্বামী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করেন। পরে দায়িত্বরত ডাক্তার তার স্বামীর জন্য রক্ত প্রয়োজন জানিয়ে জরুরিভাবে রক্তের ব্যবস্থা করার পরার্মশ দেন। তখন রক্তের সন্ধানে শান্তা হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ব্লাড ব্যাংকের সামনে গিয়ে ৩ থেকে ৪ জনকে দেখতে পান। তাদেরকে তার স্বামীর জন্য ‘ও’ পজিটিভ রক্তের প্রয়োজন জানালে তাদের মধ্যে মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব রক্তের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। একদিন পরে তিনি নিজেই যোগাযোগ করেন।”
র্যাব কর্মকর্তা আরেফিন বলেন, ‘মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক শাখার কেউ না। তার মা একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে জানিয়ে মিরপুরের মধ্য মণিপুর পাড়ায় অবস্থিত শিফা ভিলার ভাড়াটিয়া মাশনু আরা বেগম ওরফে শিল্পীর বাসায় ওই গৃহবধূকে নিয়ে যান মনোয়ার। পরে শিল্পীর সহযোগিতায় মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব শান্তাকে ধষর্ণ করেন। এ সময় শান্তা সজিবের হাত থেকে বাঁচতে চিৎকার করেন। তখন তার গলা চেপে ধরে এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরে শান্তা লোকলজ্জার ভয় ও স্বামীর অসুস্থতার কারণে ধর্ষণের বিষয়টি গোপন রাখেন।’
কিন্তু গত বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কল দিয়ে রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে জানিয়ে তার সঙ্গে আবার শান্তাকে দেখা করতে বলেন মনোয়ার। তখন শান্তা ফের ধর্ষিত হওয়ার ভয়ে তার স্বামীকে বিষয়টি খুলে বলেন। পরে তারা দুজনে র্যাব-২ এর কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করলে অভিযুক্তদের মিরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা র্যাবের কাছে মনোয়ার হোসেন সজীব ধর্ষণ ও মাশনু আরা বেগম ওরফে শিল্পী সহযোগিতার কথা স্বীকার করেছেন।’
তারা আরও জানান, মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীবের সঙ্গে শিল্পীর দীর্ঘদিন অবৈধ সর্ম্পক রয়েছে। তারা একে অন্যকে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ কাজে সহযোগিতা করেছেন।