ঢাকা: ‘আমাদের যতটুকু সদিচ্ছা দেখানোর, দেখিয়েছি। আর মনে করি সেটা ভালোই হয়েছে। আমরা যে সংবেদনশীল, আমরা ভারতীয় বন্ধুদের সুবিধা-অসুবিধা দেখি সেটা আমরা প্রমাণ দিয়েছি। এখন ভারতীয়দের সময় প্রমাণ দেওয়ার। তাই ভারতীয়দের সময় যে, তারাও আমাদের সমস্যা দেখুক’- বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন।
শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সারাবাংলা.নেট আয়োজিত সারাবাংলা ফোকাসে ‘তিস্তা চুক্তি হলেও বাংলাদেশ ন্যায্য হিস্যা পাবে কি’ শীর্ষক বিষয়ক অনুষ্ঠানে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আরও অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সারাবাংলা.নেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এম এ কে জিলানী।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারত সম্প্রতিকালে তিস্তা চুক্তির তালিকা থেকে বেরিয়ে গেছে। তাই আমাদের অবশ্যই নিজেদের স্বার্থ দেখতে হবে। আমি মনে করি, আমাদের চীনের দিকে যাওয়া উচিত। আমরা কিন্তু ভারতীয় মানুষদের আমাদের বন্ধু মনে করি। বিশেষ করে ত্রিপুরার মানুষের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অনুভূতি অন্যরকম। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর কুমিল্লা থেকে যাওয়া বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ মানুষে তারা আশ্রয় দিয়েছিল। যা নিজেদের সংখ্যার চেয়ে বেশি। আমরা মনে করি, যতটুকু সদিচ্ছা দেখানোর দেখিয়েছি তাতে ভালোই হয়েছে। পানির পরিমাণটা বেশি না। একটা ছোট শহরের খাবারের পানির সমস্যা ছিল। এটা মানুষের একটা মৌলিক সমস্যা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে সংবেদনশীল, আমরা যে ভারতীয় বন্ধুদের সুবিধা-অসুবিধা দেখি। সেটা আমরা প্রমাণ দিয়েছি। এখন ভারতীয়দের সময় প্রমাণ দেওয়ার যে, তারা আমাদের সমস্যা দেখে। এছাড়া মুহুরি নদীর চরের যে সীমান্তটা এখানে ভারতের কোনো বক্তব্য গ্রহণযোগ্য না। বঙ্গবন্ধুর সময় যখন আমরা ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি সই করলাম সঙ্গে সঙ্গে সেটাকে বাস্তবায়ন করেছি। আর ভারত সেটা ৪৬ বছর লাগিয়েছে। তারপরে এতকিছুর পরে আমরা যেখানে চুক্তিতে পৌঁছেছি সেখানে ভারতের কোনো কিছুতে স্পর্শ করা উচিত না। এগুলো থেকে বিরত থাকা উচিত বলে আমি মনে করি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান সময়ে করোনার ভ্যাকসিনের সমস্যা বিশাল। তাই প্রতিযোগিতা থেকে সরে গিয়ে এই উপমহাদেশে এক ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন। তাই ভারতের সঙ্গে সামনে যে সামাজিক আলোচনা হবে সেখানে ভ্যাকসিন বিষয়টা থাকতে পারে। মনে রাখতে হবে, এই দুযোর্গ শেষ দুযোর্গ না। কিভাবে এটা থেকে উঠে আসা যায় সেটা নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ভাবতে হবে। কেন না বডার্র নিয়ন্ত্রণ করলেই যে জনগণকে বাঁচানো যাবে সেটা কিন্তু নয়।‘