চিকিৎসার নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা, ঠেকাতে নেই উদ্যোগ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:২১
ঠাকুরগাঁও: জেলায় চিকিৎসার নামে প্রতারণা করেও পার পেয়ে যাচ্ছে কতিপয় নামধারী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক। সম্প্রতি জনসেবা ক্লিনিকের মালিক কৃষ্ণচন্দ্র রায় চিকিৎসার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য বিভাগ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জনসেবা ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে সারাবাংলায় সংবাদ প্রকাশের পর জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার ওই ক্লিনিক পরিদর্শনে যান।
এ সময় তিনি প্রতারণার অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পান বলে জানান। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সময় চেয়ে আবেদন করেন। তবে পরবর্তীতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য বিভাগের এই কর্মকর্তার লিখিত পত্রের জবাব এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল না করেই প্রতারণা অব্যাহত রেখেছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের কিসামত তেওয়ারীগাঁও মুন্সিপাড়া নামক এলাকায় পাকা সড়কের পাশে গ্রাম এলাকায় গড়ে উঠেছে ‘জনসেবা ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টক সেন্টার’। কথিত এই ক্লিনিকের নেই সরকারি অনুমোদন বা লাইসেন্স, নিজস্ব ভবন, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, সার্বক্ষণিক চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। তারপরেও স্বাস্থ্য বিভাগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে ঠকিয়ে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
প্রতারণার শিকার রোগীর স্বজন মনোরঞ্জন রায় বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই এই সব ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার কিভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। একটি সূত্র বলছে, সরকার দলীয় এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় এই সব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।’
গড়েয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, ‘জনসেবা ক্লিনিকের মালিক একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।’
জনসেবা ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক কৃষ্ণ চন্দ্র রায় বলেন, ‘এখানে কোনো প্রতারণা হয়নি। কিছু বিষয় জানতে চেয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ চিঠি আমাকে চিঠি দিয়েছিল। আমি তার উত্তরও দিয়েছি।’ নারী কেলেঙ্কারির বিষয়টি সঠিক নয় বলেও জানান তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মিটিংয়ে আছি, বিষয়টি নিয়ে কাজ হচ্ছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’