Friday 13 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জনস্বাস্থ্যের জরুরি পরিস্থিতির তথ্য গোপন করা যায় না’


২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:১৯
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: জনস্বাস্থ্যের জরুরি পরিস্থিতির এবং প্রকৃত অবস্থার তথ্য মানুষের কাছে লুকানো যাবে না। জরুরি স্বাস্থ্য তথ্য যত বেশি মানুষকে জানানো যাবে, মানুষ তত বেশি সচেতন হবে, নিজেদের প্রস্তুত করতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনারে (ওয়েবিনার) স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও অধিকারকর্মীরা এ কথা বলেন।

‘করোনা: মহামারি, জনগণ, সরকার ও তথ্য অধিকার’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্য অধিকার সুরক্ষা বিষয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় তথ্য অধিকার দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য- ‘তথ্য অধিকার সংকটে হাতিয়ার’ ও স্লোগান: ‘সংকটকালে তথ্য পেলে জনগণের মুক্তি মেলে’ নির্ধারণ করা হয়েছে।

ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে দেশব্যাপী জনগণের সচেতনতা এখন অনেকটা কমে গেছে। এর পেছনে বড় কারণ সরকারের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত তথ্যের প্রবাহ কমে যাওয়া। এজন্য দৈনিক বুলেটিন প্রকাশের পাশাপাশি সপ্তাহে অন্তত একদিন প্রশ্নোত্তরের সুযোগ রেখে সংবাদ সম্মেলন করা প্রয়োজন।’

আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘করোনকালে তথ্য অধিকারের লঙ্ঘন, তথ্য প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করা ও স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে। মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্য অধিকার লঙ্ঘনের ১ হাজার ৯২৯ ঘটনা আর্টিকেল নাইনটিন রেকর্ড করেছে। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৬১৩ জন। এসময় শুধুমাত্র মতপ্রকাশজনিত অধিকার লঙ্ঘনের ৭৬৮টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়।’

সঞ্চালকের বক্তব্যে ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘করোনার অভিজ্ঞতা সবার জন্যই নতুন। করোনা বিষয়ক রিপোর্টিংয়ের শুরুতে সাংবাদিকদের সচেতনতার ঘাটতি ছিল। নিজেদের সুরক্ষিত রেখে কিভাবে মহামারির সময়ে রিপোর্ট করতে হয় তা অনেকের জানা ছিল না। এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘সরকারের মুখাপেক্ষী না হয়ে করোনা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং প্রতিরোধ গড়তে জনগণকেও উদ্যোগ নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং অন্যান্য সরকারি অফিসের কিছু কর্মকর্তার একটা ধারণা আছে, যে সব তথ্য সবাইকে জানানো যাবে না। কিন্তু ব্যক্তিগত তথ্য ছাড়া রোগ সম্পর্কিত তথ্য এবং বৈজ্ঞানিক তথ্য গোপন করার কিছু নাই। করোনার প্রথম দিকে নিজে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশি, ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত রোগীদেরকেও অনেক ডাক্তার চিকিৎসা সেবা দেয়নি।’ তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর সংখ্যা কখনো গোপন করা যায় না এবং এ সংক্রান্ত তথ্য গোপন করাও কাম্য নয়। ঝুঁকির তথ্য সরবরাহ করে জনগণকে এমনভাবে ক্ষমতায়িত করা দরকার, যাতে নিজেদের সুরক্ষার যথাযথ ব্যবস্থা তারা নিজেরাই নিতে পারে। এজন্য সপ্তাহে একদিন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিলেই হয়। করোনা বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটিও এই মত দিয়েছে।’

তথ্য প্রবাহ আর তথ্যের অবাধ প্রবাহ এক নয় মন্তব্য করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক ও মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক ডা. এ কে এম শামসুজ্জামান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধি (ইন্টারন্যাশনাল হেলথ রেগুলেশনস) অনুযায়ী মহামারিকালে কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাবে আর কোনটি করা যাবে না সে বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। করোনা বিষয়ে জরুরি তথ্য পাওয়া জনগণের অধিকার এবং সরকারও তা প্রকাশে বাধ্য। একইভাবে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে সচেতন হওয়া ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাও জনগণের দায়িত্ব।’

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী; বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা টিএমএসএসের উপ-নির্বাহী পরিচালক ও সংস্থাটির স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. মো. মতিউর রহমান এবং দ্য কার্টার সেন্টার বাংলাদেশের দলীয় প্রধান সুমনা এস মাহুমদ।

করোনা চিকিৎসা জরুরি টপ নিউজ স্বাস্থ্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর