‘শেখের বেটি আসছে, পিছিয়ে থাকবে না বাংলাদেশ— সে কথাই সত্যি হলো’

ঢাকা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ১৯৮১ সালে যখন শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এলেন, তখন আপামর জনসাধারণের মুখে ছিল- ‘শেখের বেটি আসছে, আর পিছিয়ে থাকবে না বাংলাদেশ’। সে সময়ের কথা আজ সত্যিতে পরিণত হলো। সেই সত্যটা এখন বিশ্ববাসীও দেখতে পাচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার সোনারগাঁ জনপথ রোডের জমজম টাওয়ার এলাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে আয়োজিত দুদিনব্যাপী কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে উত্তরায় ৭৪টি গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে ‘পরম্পরা কানন’ উদ্বোধনের পর এ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘শেখের বেটি আসছে, আর পিছিয়ে থাকবে না বাংলাদেশ। জনগণ কথাটি যথার্থই বলেছিল। তিনি বাংলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ঘুরে বেরিয়েছেন। যেখানেই গেছেন সেখানেই বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে জনগণ বুকে আগলে নিয়েছেন। তাকে উৎসাহ দিয়েছেন, তার সঙ্গে থাকবেন বলে ম্যান্ডেট দিয়েছেন। সেজন্যই বঙ্গবন্ধুকন্যা জাতির পিতার অসম্পূর্ণ কাজগুলো একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। যেগুলো বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যখন আসছিল তখন আমরা প্রধানমন্ত্রীকে তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের বিষয়গুলো জানিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী সব শুনে বললেন, তাদের আসতে দাও। তোমরা চুপ থাকো। তাদেরকে কিছু বলো না। তখন তিনি বলেছিলেন যদি আমার ১৭ কোটি মানুষ ভাত খেতে পারে, তাহলে এদেরকেও আমরা খাওয়াতে পারব ইনশাআল্লাহ। তার এমন মানবতা তিনি প্রমাণ করেছেন বলেই আজকে তাকে মাদার অব হিউমিনিটি বলা হয়।’

এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সারাটা জীবন লাল-সবুজের পতাকার জন্য সংগ্রাম করে দেশকে স্বাধীন করে গেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দীর্ঘ সময় জেল খেটেছেন তিনি। তারই বদৌলতে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। কিন্তু আমরা কি বঙ্গবন্ধুর মতো করে এই শহরটাকে, এই দেশকে ভালোবাসি? আমরা যদি এই শহরটাকে বঙ্গবন্ধুর মতো করে ভালবাসতাম, তাহলে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করতাম না। আমরা যদি ভালোবাসতাম, তাহলে রাস্তার উপরে যেখানে সেখানে গাড়ি রেখে যেতাম না, অবৈধভাবে রাস্তার উপরে তার ঝুলিয়ে রাখতাম না, পথচারী যেন কষ্ট না পায় সেজন্য রড-সিমেন্টের বস্তা রাস্তায় ফেলে রাখতাম না। টাকা খরচ করে ফুটপাতে নিজের ছবি টাঙিয়ে রাখতাম না।’

মেয়র বলেন, ‘অনেকে ফুটপাতে স্থায়ী স্থাপনা তৈরি করেছে। আবার এমন ঘটেছে যে, প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে, শেখ রাসেলের নাম দিয়েও স্কুল করে রাস্তা দখল করেছে। এসব আপনারা করবেন না, প্রধানমন্ত্রী এগুলো পছন্দ করেন না, বঙ্গবন্ধু পরিবারের কেউই এসব পছন্দ করেন না। বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করব, এই ধরনের স্কুল আপনারা নিজের জমিতে গিয়ে করুন, জনগণের রাস্তা দখল করে এসব চলবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ডেঙ্গু মোকাবিলা করবো। এবার ডেঙ্গুতে একজনও মারা যায়নি। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পেরেছি। রাজধানীতে দশটি ইউলুপের কাজ শুরু করেছি। উত্তরা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত এই দশটি ইউলুপের কাজ এ বছরেই শেষ করব। ২০২১ সালের মধ্যে এই নগরবাসীকে যানজটমুক্ত নগরী উপহার দেব। সবাই মিলে সবার ঢাকা গড়ার জন্য আমি আজকের অনুষ্ঠানে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিএমইএ’কে দাওয়াত করেছি। প্রত্যেককে আমি গাছ লাগানোর জন্য উৎসাহিত করছি। আমরা সাতাশটি পার্ক করতে যাচ্ছি, কিন্তু আমরা যেই পার্কেই যাই সেখানেই মামলা। কারণ পার্কের মধ্যে কারও দাদার বাড়ি অথবা কারও রাজনৈতিক সম্পত্তি রয়েছে। আমি বলতে চাই, যে পার্কগুলোর কাজ আমরা হাতে নিয়েছি আগামী ৩ অক্টোবর যার যার নানার বাড়ি, দাদার বাড়ি, রাজনৈতিক অফিস আছে, সেগুলো আমি উচ্ছেদ করে দেব। এই পার্ক জনগণের এই পার্ক আগামী প্রজন্মের, কারও নিজস্ব সম্পত্তি না।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী সেলিম রেজা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম প্রমুখ।

আতিকুল ইসলাম আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল টপ নিউজ ডিএনসিসি মেয়র শেখ হাসিনা শেখের বেটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী