স্ত্রী-সন্তানকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৫৯
ভোলা: ভোলার দৌলতখান উপজেলার পশ্চিম জয়নগর গ্রামে স্ত্রী ও সন্তানের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে বেল্লাল হোসেন পাটওয়ারীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বেল্লাল উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের নাছির পাটোয়ারীর ছেলে।
দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে মামলার বিচারকাজ চলার পর মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোলার জেলা ও দায়রা জজ এ বি এম মাহমুদুল হক আসামি বেল্লাল হোসেনকে পেনাল কোড ১৮৬০-এর ৩০২ ধারার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড ও ২০১ ধারার অভিযোগে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আাইনজীবী সৈয়দ আশরাফ হোসেন লাভু রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। রায়ে বাদী পক্ষও সন্তুষ্টি জানিয়েছেন।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার সময় আসামি বেল্লাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও রায় শোনার জন্য আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় জমান উৎসুক জনতা।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, আসামি বেল্লাল হোসেন ঢাকায় গাড়ি চালাতেন। মাঝে মাঝে স্ত্রী-সন্তানদের দেখতে বাড়ি যেতেন। ২০১৭ সালে তার প্রথম সন্তান মেহেদীর বয়স ছিল সাত বছর, দ্বিতীয় সন্তান মাহেনার বয়স ছিল একবছর। ওই সময় তিনি স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তবে এরপরও তিনি প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। বিষয়টি দ্বিতীয় স্ত্রী জানতে পারলে তা নিয়ে বেল্লালের সঙ্গে ঝগড়া হয়। পারিবারিক কলহের একপর্যায়ে বেলাল তার স্ত্রীকে হত্যার জন্য একাধিক প্রচেষ্টা চালায়। শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালের ২ জুন দিবাগত রাতে ছুরি দিয়ে স্ত্রীর গলাকেটে তাকে হত্যা করেন তিনি। পরে হত্যাকাণ্ডকে দুর্ঘটনার রূপ দিতে স্ত্রীকে কম্বলে পেচিয়ে তাকে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। একই আগুনে স্ত্রীর সঙ্গে ছোট মেয়েও মারা যায়। ছেলেকে নিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যান বেল্লাল।
পরে বেল্লাল হোসেন ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। হত্যাকাণ্ডে অন্য কেউ জড়িত ছিল না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।