পল্টন থানা হেফাজতে তরুণের মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:১৩
ঢাকা: রাজধানীর পল্টন থানা হেফাজতে মাসুদ রানা নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের দাবি, তিনি ছিলেন মাদকসেবী। ইয়াবা মামলার আসামিও ছিলেন তিকনি। তবে পরিবারের অভিযোগ, থানায় নেওয়ার পর নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে তাকে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এলাকার পাশ থেকে মাসুদ রানা ও তার বন্ধু মমিনকে (৩৬) গ্রেফতার করে পল্টন থানা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ১০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মাসুদ রানা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসুদকে মৃত ঘোষণা করেন।
পল্টন থানা পুলিশ বলছে, নিহত মাসুদ রানা ইয়াবা মামলার আসামি ছিলেন। থানায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) ওয়ালিদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, মঙ্গলবার রাতে দু’জন মাদকসেবীকে থানায় ধরে আনলে একজন মেঝেতে পড়ে যান। এসময় তিনি মাথায় আঘাত পান। এরপরই তাকে প্রথমে রাজারবাগ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, কী কারণে মৃত্যু হয়েছে, তা চিকিৎসকরা ভালো বলতে পারবেন।
তবে মাসুদ রানার স্ত্রী রেহানা বেগমের দাবি, তার স্বামী মাদকাসক্ত ছিলেন না। পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যান তিনি। বুধবার পল্টন থানার ভেতরে রেহানা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, মাসুদ ইয়াবার ব্যবসা করত না। নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকায় একটি ওয়েল্ডিং ফার্মে কাজ করত। তাকে গতকাল বিকেলে কাঁচপুর এলাকা থেকে তুলে আনা হয়েছে। যদিও তাকে গুলিস্তান এলাকা থেকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। থানায় আনার পর তাকে নির্যাতন করে মারা হয়েছে।
এরপর রেহানাকে পুলিশের একটি দল সহকারী কমিশনারের কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর সেখান থেকে বের হন তিনি। ভেতরে তার কাছে কী জানতে চাওয়া হয়েছে— জানতে চাইলে রেহানা বলেন, একটি ভিডিও দেখানো হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, মাসুদ দেয়ালে দুইবার মাথা ঠুকেছে। এরপরই সে পড়ে যায়। তবে তাকে যখন থানায় দেখা যাচ্ছিল, তখন তার হাত ঝুলানো অবস্থায় দেখা যায়। মনে হচ্ছে কোনো শক্তি নাই। তার মানে তাকে আগেই নির্যাতন করা হয়েছে। সেই নির্যাতনের ফলেই মাসুদ দেয়ালে মাথা ঠুকেছে।
মাসুদের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, মাসুদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তরুণের মৃত্যু থানা হেফাজত নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ নির্যাতনের অভিযোগ পল্টন থানা মাদকসেবী স্ত্রীর অভিযোগ