ঢাকা: আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ড. তাহমিদ আহমেদ। প্রতিষ্ঠানটির ৬০ বছরের ইতিহাসে তিনিই প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই পদে নিয়োগ পেলেন।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় আইসিডিডিআর,বি। ড. আহমেদ ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাহী পরিচালক পদে ২০১৩ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসা অধ্যাপক ক্লেমেন্সের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আইসিডিডিআর,বি’র আন্তর্জাতিক বোর্ড অব ট্রাস্টিজ ড. তাহমিদকে পরবর্তী নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। নিয়োগ পাওয়ার পর ড. তাহমিদ কোভিড-১৯ বিষয়ে গবেষণাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালনের বিষয়ে ড. তাহমিদ বলেন, আইসিডিডিআর,বি’র প্রথম বাংলাদেশি নির্বাহী পরিচালক হওয়া নিঃসন্দেহে একটি গৌরবের বিষয়। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং জনস্বাস্থ্যকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিনিয়োগের গুরুত্ব অপরিসীম। এসব নিয়ে আমরা কাজ করব।
গবেষণা এবং শিশুর অপুষ্টি রোধ ও এর সহজ চিকিৎসা ব্যবস্থার সন্ধানে ড. তাহমিদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তিনি এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বুলেটরি পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন, কমনওয়েলথ সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রো-এন্টারোলোজি অ্যান্ড নিউট্রিশন এবং ভারতীয় পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য সংস্থার পদক পেয়েছেন। ২০১৮ সালে পান ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক ডেভেলপমেন্ট ট্রান্সফর্মারস পুরস্কার।
আইসিডিডিআর,বি তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ড. তাহমিদ আহমেদ ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দেন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে তিনি সেখানকার নিউট্রিশন ও ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস বিভাগের সিনিয়র ডিরেক্টর নিযুক্ত হন।
ড. তাহমিদ আহমেদের পুষ্টি বিষয়ক গবেষণা এবং এর বাস্তবায়ন শিশুদের অপুষ্টি, যক্ষ্মা ও ডায়রিয়া চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। একইসঙ্গে তিনি শিশুদের তীব্র অপুষ্টি ও ডায়রিয়া চিকিৎসায় একটি প্রোটোকল তৈরি করেছেন, যার ফলে হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ কমেছে। এছাড়াও তিনি স্থানীয় উপাদান দিয়ে সহজে ব্যবহারযোগ্য (রেডি-টু-ইউজ) এক ধরনের খাদ্য তৈরি করেছেন, যা তীব্র অপুষ্টি প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। অপুষ্টি, আন্ত্রিক রোগ ও মানসিক বিকাশের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে কয়েকটি দেশে পরিচালিত ম্যালনিউট্রিশন-এন্টেরিক ডিজিজ (ম্যাল-এড) প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের প্রধান গবেষক ড. তাহমিদ।
আন্তর্জাতিক জার্নাল ও বইয়ে ড. তাহমিদের ৩৬০টি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কমনওয়েলথভুক্ত ৫৪টি দেশের শিশু পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞদের সংগঠন পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রো-এন্টারোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশনের (ক্যাপগান) সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।