‘যৌথ ব্যবসার বিরোধ থেকে মা-ছেলেকে খুন’
১ অক্টোবর ২০২০ ১৬:৩৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে নিজ বাসায় এক নারী ও তার ছেলেকে নৃশংসভাবে হত্যায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। যৌথ ব্যবসার টাকা-পয়সা নিয়ে বিরোধের জেরে ওই নারীকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয় এবং সেটা দেখে ফেলায় তার ছেলেকেও ওই ব্যক্তি খুন করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) ভোরে নগরীর আকবরশাহ থানার পাক্কা রাস্তার মাথা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় র্যাব। গ্রেফতার মো. ফারুক (৩৩) নগরীর চান্দগাঁও থানার খাজা রোডের কসাইপাড়া এলাকার মো. সিরাজের ছেলে।
গত ২৪ আগস্ট রাতে নগরীর চান্দগাঁও থানার পাঠানিয়া গোদা এলাকায় রমজান আলী সেরেস্তাদার বাড়ির ভাড়াঘর থেকে মা গুলনাহার বেগম (৩৩) ও ছেলে রিফাতের (৯) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গুলনাহারের মেয়ে ময়ূরী আক্তার (১৯) পোশাক কারখানা থেকে ফিরে মা ও ভাইয়ের রক্তাক্ত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছিল, দু’জনকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন করা হয়েছিল। তাদের বাসায় ‘পেয়িং গেস্ট’ হিসেবে থাকা ফারুককে ঘটনার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এ ঘটনায় ফারুককে আসামি করে মামলা করেন ময়ূরী। পলাতক ফারুককে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও অভিযান এবং ছায়া তদন্তে নামে।
ফারুককে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল বলেন, ‘গুলনাহারের বাসায় সাত বছর ধরে থাকতো ফারুক। তারা যৌথভাবে ব্যবসা করতো। গুলনাহার বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করতেন আর ফারুক সেগুলো বিক্রি করতো। যৌথ ব্যবসার টাকা-পয়সা নিয়ে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। ফারুক বিভিন্নসময় গুলনাহার ও তার ছেলেমেয়েদের হত্যার হুমকি দিয়েছিল।’
‘ঘটনার দিন সে বাসায় গিয়ে প্রথমে গুলনাহারকে খুন করে। রিফাত দেখে ফেলায় তাকেও খুন করে পালিয়ে যায় ফারুক। চট্টগ্রাম নগরী থেকে পালিয়ে প্রথমে ফারুক খাগড়াছড়ি যায়। সেখান থেকে ঢাকা হয়ে আবার চট্টগ্রামে আসে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
গ্রেফতারের সময় ফারুকের কাছে একটি বিদেশি পিস্তল, ২ রাউন্ড গুলি ও একটি ছোরা পাওয়া গেছে বলে জানান লে. কর্নেল মশিউর।
এদিকে একই সংবাদ সম্মেলনে গুলনাহারের মেয়ে ময়ূরী আক্তার জানান, বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়ার পর ফারুক তার মায়ের গায়ে হাত তুলতেন। এমনকি রিফাত ও ময়ূরীকেও মারধর করতেন। ঘটনার আগে তারা এ বিষয়ে এলাকার লোকজন এবং ফারুকের মায়ের কাছে বিচার দিয়েছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয় ফারুক। তিনজনকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। ঘটনার দুদিন আগে তার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করেছিল ফারুক।