কৃত্রিম দুর্ভিক্ষের চেষ্টা দেখছে ওয়ার্কার্স পার্টি
১ অক্টোবর ২০২০ ১৮:২৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মজুতদারদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে চালের মূল্য স্বাভাবিক রাখাসহ আট দফা দাবিতে খাদ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা ওয়ার্কার্স পার্টি। এসময় দলটির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান খাদ্য নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত মজুত গড়তে এবং চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য খাদ্য অধিদফতরকে দায়ী করেন। তিনি দেশে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ তৈরির চেষ্টা চলছে বলেও আশঙ্কা করেন।
বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের মাধ্যমে খাদ্যমন্ত্রী বরাবর এ স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক রূপান্তর চাকমা।
স্মারকলিপি যে আট দফা দাবি জানানো হয়েছে সেগুলো হচ্ছে— সরকারিভাবে ধান-চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রায় ঘাটতি পূরণ; চালকল মালিকদের চুক্তিমতো চাল দিতে বাধ্য করা, অন্যথায় জামানত বাজেয়াপ্ত ও জরিমানাসহ দণ্ড দেওয়া; মজুতবিরোধী আইন প্রয়োগ করে মজুত করা খাদ্য উদ্ধার ও মজুদকারীকে দণ্ড দেওয়া; চালের বাজারে সক্রিয় সিন্ডিকেট কঠোরভাবে দমন; উৎপাদন খরচ বিবেচনায় নিয়ে কৃষকদের ধান ও চালের উপযুক্ত দাম দেওয়া; গুদাম সংকট, ক্রয়কেন্দ্রের অপ্রতুলতা ও হয়রানি বন্ধের জন্য প্রতি উপজেলায় পেডি সাইলো নির্মাণ ও সমবায় ভিত্তিতে পরিচালনা; কৃষকদের সমবায় করে তাদের সাশ্রয়ী সুদে ঋণ দেওয়া; ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল প্রদানের কর্মসূচি বছরব্যাপী বিস্তৃত করা; এবং সারাদেশে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা।
স্মারকলিপি দেওয়ার সময় শরীফ চৌহান বলেন, ‘সরকার চলতি মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল, তার চেয়ে ৯ লাখ টন কম সংগ্রহ হয়েছে। চালকল মালিকরা চুক্তি অনুযায়ী সরকারকে চাল দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তার মজুত গড়ে তুলতে খাদ্য অধিদফতর যে নিদারুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে তার প্রমাণ ধান-চাল সংগ্রহের সময়সীমা বাড়িয়েও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম সংগ্রহ হওয়া। আমাদের আশঙ্কা— অতীতের মতো খাদ্য মজুত থাকার পরও কেউ কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।’
দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির অপচেষ্টা রুখতে মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতিতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমছে। কিন্তু বাজারে চালের দাম বাড়ছে। গরীব ও প্রান্তিক মানুষ দুঃসহ অবস্থায় পড়েছে। যেকোনোভাবে চালের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে। অবিলম্বে মজুতবিরোধী আইন প্রয়োগ করতে হবে। মজুতদারদের শাস্তি দিতে হবে। সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সরকারি ধান-চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রায় যে ঘাটতি এখনো রয়ে গেছে তা প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে কিনে পূরণ করতে হবে। তাহলেই কৃত্রিম সংকট তৈরির যেকোনো অপচেষ্টা ঠেকানো সম্ভব হবে।’
স্মারকলিপি দেওয়ার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সদস্য শামসুল আলম, আব্দুর রশিদ, সুপায়ন বড়ুয়া, শিবু কান্তি দাশ, যুব মৈত্রী চট্টগ্রাম জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন মিয়া।
কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ কৃত্রিম সংকট চালের দাম দুর্ভিক্ষ দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির শঙ্কা মজুত মজুতদার