দুর্গাপুরে কাকৈরগড়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি
২ অক্টোবর ২০২০ ১৭:৩৯
নেত্রকোনা: নেত্রকোনার দুর্গাপুরে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের রামবাড়ী, লক্ষীপুর, দুর্গাশ্রমসহ ১০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবের সঙ্গে যোগাযোগ স্থবির হয়ে পড়ায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের।
বন্যাদুর্গত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু স্থানে অথবা আশ্রয় কেন্দ্রে। দফায় দফায় বন্যায় প্রধান গ্রামীণ সড়কগুলো ভেঙে গিয়ে ডোবায় পরিণত হয়েছে। গ্রামের হাজারও মানুষের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম এখন নৌকা। বিশুদ্ধ পানি ও রান্না করা খাবারের পাশাপাশি পশু খাদ্যের সংকটে পড়েছেন বন্যাকবলিত এই এলাকার মানুষেরা।
বন্যায় এই এলাকার হাজারও একর আমন ধানের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। যে আমন ধানের ভালো ফলন নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন তারা, সেই ধান এখন আদৌ ঘরে তুলতে পারবেন কি না, সেই শঙ্কা জেঁকে ধরেছে তাদের। অনেকের পুকুরের মাছও ভেসে গেছে। এছাড়াও ঢলের পানির সঙ্গে বালি পড়ে নষ্ট হচ্ছে তীরবর্তী আবাদি জমিগুলো। ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসা, হাট-বাজার ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন স্থাপনা।
বন্যার পানিতে ভেসে গেছে রামবাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদের শেষ সম্বল বসত ভিটা। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে স্থানীয় একটি মাদরাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। সরকারিভাবে সহযোগিতা না পেলে ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়া কিছু করার উপায় থাকবে না কৃষক আব্দুল হামিদের।
এলাকাবাসীর দাবি, স্থায়ীভাবে নদীর বেড়িবাঁধ দিয়ে এবং এখানকার ভাঙা রাস্তাগুলো মেরামত করে তাদেরকে ভয়াবহ বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। তা না হলে, প্রতি বছর কৃষক আব্দুল হামিদের মতো অনেককেই বসত ভিটা হারাতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেত্রকোনা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, পরপর কয়েক দফা বন্যা হওয়ায় পানির প্রবল স্রোতে বেশ কিছু এলাকার বাড়িঘর ভেঙে গেছে। ভাঙন এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনাও পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
১০ গ্রামের মানুষ কাকৈরগড়া ইউনিয়ন দুর্গাপুর উপজেলা পানিবন্দি পাহাড়ি ঢল বন্যা