Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএনপি ১০ বছর থেকেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে পারেনি: তথ্যমন্ত্রী


২ অক্টোবর ২০২০ ২১:১৮

ঢাকা: আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১৯৯১ ও ’৯২ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশে যেসব রোহিঙ্গারা এসেছিল তাদের অনেকেই কিন্তু এখনও আছে। তাদের সবাই ফেরত যায়নি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলব ১৯৯১ সালের পর বিএনপি দু’দফায় ১০ বছর ক্ষমতায় ছিল, তাদের সময়ে যে রোহিঙ্গারা এসেছিল তাদেরকে তারা ফেরত পাঠাতে পারেননি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। সেখানে যেই বর্বরতা চলছিল সেই বর্বরতার হাত থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা রক্ষা পেয়েছে। এতে সমগ্র পৃথিবী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও গণমাধ্যম প্রধানমন্ত্রীকে ‘মাদার অব হিমিউনিটি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। যেখানে সমগ্র পৃথিবী প্রশংসা করছে সেখানে বিএনপি প্রশংসা করতে পারেনি।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর সিআরবি শিরিষ তলায় সামাজিক সংগঠন ‘তিলোত্তমা চট্টগ্রাম’ আয়োজিত মুজিববর্ষ উপলক্ষে পাঁচ লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যশেষে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঠিক মতো হচ্ছে না বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

তিলোত্তমা চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাহেলা আবেদীন রীমা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক, সিএমপি’র উপ পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক, সাংবাদিক ওসমান গণি মনসুর, সিপিডিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখার সোহাগ, চট্টগ্রামের প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, এলভিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান রইস উদ্দিন সৈকত, শিল্পপতি এসএম আবু তৈয়ব, লায়ন শামসুদ্দিন সিদ্দিকী, দৈনিক আজাদী’র সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফ, সাবেক কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদ প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই ওআইসি’র পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক আদালতে মায়ানমারের বিচার হচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের সরকার কোন যুদ্ধ বিগ্রহের মাধ্যমে নয় কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে এবং আন্তর্জাতিক মহল থেকে চাপের মাধ্যমে, কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে চায়, আমরা সেই পথেই হাঁটছি। এতে ইতিমধ্যে অনেক সফলতা এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আদালত থেকে মায়ানমারকে সমন দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অনেককে বিচারের আওতায় আনতে বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে মায়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালত থেকে তিরস্কারের মতোই করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশেরই কূটনৈতিক তৎপরতার সফলতা।’

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৮১ সাথে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে দেশে আসার পর ১৯৮৩ সাল থেকে তিনি বৃক্ষরোপনকে আন্দোলনে রূপান্তর করার উদ্দেশ্যে কৃষক লীগের মাধ্যমে মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান শুরু করেছিলেন। ’৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর বৃক্ষরোপণকে পরিপূর্ণভাবে একটি আন্দোলনে রূপান্তর করতে তিনি সক্ষম হয়েছেন। মানুষ এখন হাটবাজারে গিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি গাছের চারাও কিনে আনেন। বিভিন্ন হাটবাজারে অন্যান্য দোকানের পাশাপাশি এখন গাছের চারার দোকানও আছে। এতে করে দেশে আজকে বৃক্ষরোপণ একটি আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছে। এই আন্দোলনের পেছনে তিলোত্তমা চট্টগ্রামের মতো সামাজিক সংগঠনগুলোর বিরাট অবদান রয়েছে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বৃক্ষাচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ হচ্ছে ভূ-ভাগের ২২ দশমিক ৪ শতাংশ, বনভূমির পরিমাণ ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ। এই ছোট্ট দেশে বৃক্ষাচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ ভারতের চেয়েও বেশি। তবে আমাদের দেশ আরো সুন্দর ও পুষ্পপল্লবে সুশোভিত হতে পারতো যদি আমরা আরেকটু সচেতন হতাম। বৃক্ষরোপনের ক্ষেত্রে আমরা যদি আরেকটু যত্নবান হই তাহলে আমরা দেশকে আরো সুন্দর করতে পারি।

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে গাছ কাটা ও পাহাড় কাটার বিষয়টা খেয়াল রাখা হয় না। চট্টগ্রাম অপরূপ সৌন্দর্য্যের নগর, কিন্তু চট্টগ্রামে উন্নয়নের নামে নির্বিচারে গাছ কেটে, পাহাড় কেটে সৌন্দর্যহানি ঘটানো হয়েছে। চট্টগ্রামকে শ্রীহীন করা হয়েছে। নগর উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানও এ বিষয়টি অনেক সময় খেয়াল রাখেনি।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে রাস্তা করতে গিয়ে পাহাড় কেটে সমান করে ফেলা হয়েছে। রাতের অন্ধকারেও পাহাড় কাটা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে চেষ্টা করা হয়, কিন্তু অনেকসময় রক্ষা করা যায় না। আবার অনেকক্ষেত্রে শর্ষের মধ্যে ভূত আছে। নগর উন্নয়ন করার ক্ষেত্রে বৃক্ষকর্তন ও পাহাড় না কাটার ওপর যদি গুরুত্ব দেয়া না হয় চট্টগ্রাম নগরের সৌন্দর্য গত পঞ্চাশ-ষাট বছরে যেটুকু কমেছে আগামী পঞ্চাশ বছর পর চট্টগ্রাম শহর আর এরকম থাকবে না।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, যেদিকে চট্টগ্রাম শহর বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে, এটি বন্ধ করতে হবে। অন্যদিকে কর্ণফুলি নদীর দু’পাড়ে অনেকক্ষেত্রে দখল ও দূষণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার নামে সেখানেও দখল করা হচ্ছে। এগুলোর ব্যাপারে যদি সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে উঠে এটি করা সম্ভবপর হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমি পরিবেশ বিজ্ঞানের ছাত্র, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ১০ বছর পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম। আমি এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান পড়ানোর চেষ্টা করি এবং সপ্তাহে অন্তত ১টি ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করি। সুতরাং যখন দেখি মাঠের মধ্যে অট্টালিকা নির্মাণ করা হয়, সেটি মনে হয় আমার বুকের মধ্যে কেউ একটা পেরেক বিঁধে দিল। এভাবেই সবুজ ও প্রকৃতি নষ্ট করা হচ্ছে। আমাদের সরকার ল্যান্ড জোনিংয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং এটি সম্পন্ন হলে গ্রামেও যার যেখানে ইচ্ছা বাড়ি করা যাবে না। কোন জায়গায় কী ধরনের বাড়ি করা যাবে সেখানে সরকার নির্ধারণ করে দেবে।’

করোনা করোনা মোকাবিলা তথ্যমন্ত্রী নভেল করোনাভাইরাস

বিজ্ঞাপন

সিইসি ও ৪ কমিশনারের শপথ আজ
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০১:৩৩

আরো

সম্পর্কিত খবর