ঢাকা: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণচেষ্টার পর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এছাড়া আরেক অভিযুক্ত বাদলকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (৫ অক্টোবর) সকালে তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক এএসপি সুজয় সরকার। রোববার (৪ অক্টোবর) দিবাগত রাতে তাদেরকে পৃথক অভিযানে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে, এ ঘটনায় আবদুর রহিম (২২) নামে একজনকে আটক করেছিল বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন- নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে বখাটেদের মারধর, গ্রেফতার এক
এএসপি সুজয় সরকার জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে আসামিরা সবাই আত্মগোপানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। কিন্তু ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরপরই র্যাবও নিজস্ব গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। সে অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
সংবাদ ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
এর আগে,
রোববার (৪ অক্টোবর) দুপুরে ওই গৃহবধূকে নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। জানা যায়, উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকার নূর ইসলাম মিয়ার বাড়িতে মাসখানেক আগে এ ঘটনা ঘটে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওই গৃহবধূকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে তার মুখমণ্ডলে উপুর্যপুরি লাথি মারছে দুর্বৃত্তরা। ভিডিওধারণের সময় গৃহবধূ বখাটেদের বহুবার পায়ে ধরে কাকুতি-মিনতি করেছেন। তিনি দুর্বৃত্তদের বারবার বাবা-বাবা বলে ডাকলেও তারা ভিডিওধারণ বন্ধ রাখেনি। জঘন্য ও নারকীয় কায়দায় ওই গৃহবধূকে তারা নির্যাতন করতে থাকে। শুধু তাই নয়, ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়া হবে এবং লাইভ করতে হবে বলেও ওই সময় একে অন্যকে জানায় নির্যাতকরা।
জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বিয়ে হয় তিন বছর আগে। পরে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে তিনি বাবার বাড়িতে থাকতেন। স্বামীর সঙ্গে অনেকদিন হলো যোগাযোগও নেই তার। এর মধ্যে গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। পরে রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার কথিত বাহিনী নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে, তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ করার অভিযোগ এনে মারধর ও ধর্ষণচেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে তাকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে ওই অবস্থার ভিডিও ধারণ করে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
জানা গেছে, এলাকায় দেলোয়ার বাহিনী নামে পরিচিত একটি চক্রের প্রধান দেলোয়ার এবং তার অনুসারী বাদল, কালাম ও আবদুর রহিমসহ পাঁচ জন এই ঘটনায় অভিযুক্ত। এর মধ্যে তিন জন ধরা পড়লেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জালে।