‘তারা দুষ্কৃতকারী, তাদের অন্য কোনো পরিচয় থাকতে পারে না’
৫ অক্টোবর ২০২০ ১৮:৫৪
ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নারী নির্যাতন-ধর্ষণের সঙ্গে যারাই যুক্ত থাকুক, আর যে পরিচয়ই ব্যবহার করুক না কেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। এ ধরণের অপকর্মের সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা দুষ্কৃতিকারী, তাদের অন্য কোনো পরিচয় থাকতে পারে না।
সোমবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তানিয়া সুলতানা হ্যাপি রচিত ‘আমি হবো আগামী দিনের শেখ হাসিনা’ শিশুতোষ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। এসময় বিএনপি’র মন্তব্য ‘সরকারের জবাবদিহিতার অভাবে দেশে খুন-ধর্ষণ বাড়ছে’র প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরণের ঘটনা আগেও ঘটতো। কিন্তু আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এমন ব্যাপকতা না থাকায় অনেক ঘটনাই আড়ালে থেকেছে। এখন বেশিরভাগ ঘটনা আড়ালে থাকে না। প্রায় সব ঘটনাই প্রকাশ্যে আসে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা নারীনির্যাতন-ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার, এই বিষয়গুলো যারা তুলে ধরছেন, তাদের ধন্যবাদ। এতে করে সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরণের অপকর্ম যারা ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হচ্ছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ ধরণের ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করার কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু এগুলোকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার জন্য মাঝেমধ্যেই বিএনপির পক্ষ থেকে অপচেষ্টা চালানো হয়। এই বিএনপিই দলীয়ভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশে নারী ধর্ষণ করেছে। ২০০১ সালের পর আট বছরের শিশুকে, গর্ভবতী মহিলাকে, এমনকি নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে পুরো গ্রাম অবরুদ্ধ করে সেখানকার মহিলাদের ধর্ষণ করা হয়েছে। সেই দুঃসহ স্মৃতি এখনও অনেকে বয়ে বেড়াচ্ছে। সুতরাং যারা দলীয়ভাবে এ ধরনের অপকর্ম করেছে এবং এর বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, তাদের এ নিয়ে কথা বলার কতটুকু নৈতিক অধিকার আছে, সেটিই বড় প্রশ্ন।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেছেন, মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। অথচ তারা সকালে একবার, দুপুরে একবার, আবার বিকেলে আরও একবার সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। মির্জা ফখরুল সাহেব বললে তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা দিয়ে রিজভী সাহেব বা আরও দুয়েকজন নেতা সকাল-বিকাল-দুপর বিষোদগার করে। আর বলে, আমাদের কথা বলার অধিকার নেই, যা হাস্যকর।’
এসময় ‘আমি হবো আগামীদিনের শেখ হাসিনা’ শিশুতোষ গ্রন্থরচয়িতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শিশুরাই আমাদের জাতির ভবিষ্যত এবং আজকের এই দিনে যেদিন প্রধানমন্ত্রী শিশু দিবসের উদ্বোধন করেছেন, সেদিন এ গ্রন্থের যাত্রা শুরুটি তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের উদ্দেশ্য বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি, মানুষের আত্মিক উন্নয়নসমৃদ্ধ একটি উন্নত জাতি গঠন। সেজন্য মানুষের মধ্যে মমত্ববোধ, দেশাত্মবোধ, মূল্যবোধের সমন্বয় ঘটাতে হয় এবং সেটি শিশু বয়সেই করতে হয়। এক্ষেত্রে তারা যদি গুণে গুণান্বিতদের জীবন কাহিনী পড়তে পারে, জানতে পারে- তাহলে উন্নত জীবন গঠনে সেটি অত্যন্ত সহায়ক হয়। আর তেমনি একজন মানুষ আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। যিনি শৈশব থেকে সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যে তার জীবনকে আজকে বিশ্বনেতৃত্বের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।’
অনুষ্ঠানে তথ্যসচিব কামরুন নাহার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন, অগ্রগতি ও নারী ক্ষমতায়নে পৃথিবীর সামনে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। তার জীবন ও কর্ম আমাদের শিশু-কিশোরসহ সকলের জন্য অনুসরণীয়।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সোহানা জেসমিন, লেখক জাহাঙ্গীর আলম শোভন, সংস্কৃতিকর্মী দিপু সিদ্দিকী, নাদিবা পারভীন লাকী, নাজনীন সুলতানা নাজু, আজিমুন রুমা, নাহিদ নাজ, জামান নূর ও শিশুশিল্পী হামীম, ওমর, অনিরুদ্ধ, সাদিয়া, সারামনি, রাইফ, জুঁই, চামেলি, রামিয়া, রামিম, আবরার, সাবীত, হাসিব প্রমুখ বইমোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।