ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের কারণে স্থগিত থাকা এইচএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার তারিখ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কিভাবে ও কোন প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে, তা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। আর কবে নাগাদ এই পরীক্ষা আয়োজন করা যায়, সেই তারিখ এখনো খুঁজে পায়নি বলেই ঘোষণাও করা যায়নি। আগামী দিন দুয়েকের মধ্যে অবশ্য এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
এর আগে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন সোমবার (৫ অক্টোবর) অথবা মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করা হবে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে। এরপর বহুল প্রতীক্ষিত সেই সোম ও মঙ্গলবার পেরিয়ে গেলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এইচএসসি নিয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নভেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর পরই পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, সে বিষয়টি নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। ওই আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর সে কারণেই সোম/মঙ্গলবারের মধ্যে কোনো ঘোষণা দেওয়া যায়নি। তবে আগামীকাল বুধবার (৭ অক্টোবর) বা পরশু বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) কাঙ্ক্ষিত সেই ঘোষণা আসবে— এমনটিই বলছেন কর্মকর্তারা।
এদিকে, বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা করোনাভাইরাসের চলমান সংক্রমণ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তারা এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় বরাবর পরীক্ষা না নেওয়ার জন্য চিঠিও দিয়েছে। তবে তাদের সেই চিঠি আমলে নেওয়ার সম্ভাবনা শূন্যের কোঠায় বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হলে তখন থেকেই এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। কারণ ১ এপ্রিল থেকে এই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করার পর এইচএসসি পরীক্ষাও স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এরপর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। প্রতিদিনই সহস্রাধিক ব্যক্তি নতুন করে সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন, প্রতিদিন মারাও যাচ্ছেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ব্যক্তি।
এমন পরিস্থিতিতে দফায় দফায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা এসেছে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ঠেকেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদ। এখন নভেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলাটা কতটা যৌক্তিক হবে, সে প্রশ্নের জবাবের ওপরই হয়তো নির্ভর করছে এইচএসসি পরীক্ষার ভাগ্য।