পরীক্ষা না দিয়েও পাস করবে ফেল করা সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থী
৮ অক্টোবর ২০২০ ০৮:২৪
ঢাকা: পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নয়, বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি উত্তীর্ণ হবে শিক্ষার্থীরা। যার যার এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার ফল বিবেচনায় নিয়ে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার জন্য ‘ফল’ নির্ধারণ করা হবে। তবে পাস করবে সবাই। সেক্ষেত্রে গত বছরের উচ্চ মাধ্যমিকে অংশ নিয়ে যারা উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছে, সেই ফেল করা শিক্ষার্থীদের এ বছর পাস করার জন্য আর পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে না। ‘অটো পাসে’র আওতায় সেই প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থী এইচএসসি উত্তীর্ণের সনদ ঘরে তুলবে।
বুধবার (৭ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন না করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত এই পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, এ বছর করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পরীক্ষার্থীদের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) কিংবা সমমানের পরীক্ষাগুলোর ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় যাদেরই অংশ নেওয়ার কথা ছিল, তারা সবাই উত্তীর্ণ হবে। সুনির্দিষ্টভাবে সেই সংখ্যাটি ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন। এর মধ্যে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫০২ জন মূলত গত বছরের পরীক্ষার্থী, যারা এক বা একাধিক বিষয়ে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। তাদের জন্য সুসংবাদ, এবারের নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের মতোই তারাও পরীক্ষায় না বসেই উত্তীর্ণ হয়ে যাবেন এইচএসসিতে।
এর আগে, ২০১৯ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ জন। আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের পাশাপাশি কারিগরি ও মাদরাসা বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ছিল ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সে হিসাবে গত বছর পাস করেছিল ৯ লাখ ৮৮ হাজার ১২৭ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ফল জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৪৭ হাজার ২৮৬ জন। আর ফেল করেছিল ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫০২ জন, যাদের আর এইচএসসিতে ফেল করার ভয় থাকছে না।
এদিকে, পরীক্ষা না হলেও এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এইচএসসিতেও গ্রেড পয়েন্ট দেওয়ার কথা জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেক্ষেত্রে যাদের এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার ফল ভালো, তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। আর এসএসসি বা জেএসসিতে কোনো কারণে যাদের ফল খারাপ হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই এইচএসসিতে ভালো করার প্রস্তুতি নিয়েও সেই সুযোগটি পাচ্ছে না।
সার্বিকভাবে ব্যাচ হিসাব করলে দেখা যায়, এ বছর যাদের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল, তারা এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২০১৮ সালে। ওই বছর ১০টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ২৬ হাজার ৫৭৪ জন। এর মধ্যে ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১০৪ জন, তথা ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছি।
আবার এই শিক্ষার্থীরা জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ২০১৬ সালে। ওই পরীক্ষায় ৯ বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিল ২৪ লাখ ১২ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ১৯ লাখ ২৯ হাজার ৯৯ জন, যা মোট পরীক্ষার্থীর ৭৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। একই ব্যাচ এইচএসসিতে এসে শতভাগ ‘পাস’ করার গৌরব অর্জন করবে।