কাঁচামরিচের কেজি ৩০০, সবজির দাম কমছেই না
৯ অক্টোবর ২০২০ ১৫:২৬
ঢাকা: গেল কয়েক সপ্তাহের মতোই সবজির দাম কমার লক্ষণ নেই। চড়া বাজারে সবজি কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এর মধ্যে আবার বেড়ে গেছে কাঁচামরিচের দাম। গেল সপ্তাহে যেখানে ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে কাঁচামরিচ, সেখানে আজকের বজারে সেই দাম ছুঁয়েছে ৩০০ টাকা।
এদিকে, সরকার পাইকারি বাজারে চালের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও তার প্রভাব নেই খুচরা বাজারে। দাম বেঁধে দেওয়ার আগে বাড়তি যে দামে চাল বিক্রি হচ্ছিল, সেই দামেই এখনো বিক্রি হচ্ছে চাল। এছাড়া পেঁয়াজের বাজার সপ্তাহ দুয়েক হলো স্থির রয়েছে। আমদানি করা পেঁয়াজ অবশ্য কিছুটা কম দামে মিলছে বাজারে।
শুক্রবার (৯ অক্টোবর ) কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সবজির মধ্যে কারওয়ান বাজারে বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শসার দামও গিয়ে ঠেকেছে ১২০ টাকায়। ছোট ছোট ফুলকপিও উঠছে কারওয়ান বাজারে। সেগুলোর একেকটির দাম ৪০ টাকা। একই আকৃতির বাঁধাকপিগুলোও ৩০ থেকে ৪০ টাকা পিস দরে বিক্রি হচ্ছে। আর বাজারের সবচেয়ে ছোট লাউয়ের দামও ৭০ টাকার কম নয়। মাঝারি থেকে বড় আকৃতির লাউয়ের দাম ১০০ টাকা। আর সিমের দাম প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা।
মহাখালীর বউবাজারে সবজির মধ্যে পেঁপে ৪০ টাকা, ঢেড়স ৭০ টাকা, বটবটি ৮০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, সিম ১৪০, বেগুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা ও টমেটো ১২০ কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর এই বাজারে শশা ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও কাঁচামরিচ ২৪০ থেকে থেকে ৩০০ টাকা টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর লেবু বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৪০ টাকা হালিতে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা, রসুন ৯০ থেকে ৮০ টাকা ও আদা ২০০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
দুই বাজারের বিক্রেতারাই বলছেন, কোনো সবজির দামই আগের তুলনায় কমেনি। বরং দুয়েকটি সবজির দাম নতুন করে বেড়েছে। ফলে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে সবজি কিনতে গিয়ে।
কারওয়ান বাজারে বাজার করতে গিয়েছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী মোতাহের হোসেন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, বাজারের যে অবস্থা, সবজি খাওয়ার আর উপায় নেই। ৬০/৭০ টাকার নিচে কোনো সবজিই কিনতে পারছি না। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই এরকম দাম। কমছে তো না-ই, দিন দিন বরং বাড়ছে।
কারওয়ানবাজারের পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর মহাখালীর বউবাজারে দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। কারওয়ানবাজারে খুচরাতেও একই দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, সরকার গত ২৯ সেপ্টেম্বর চালের দাম বেঁধে দেয়। সে অনুযায়ী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ভালো মানের মিনিটেক চালের ৫০ কেজির বস্তা ২৫৭৫ টাকা এবং ব্রি ২৮-সহ মাঝারি মানের চালের ৫০ কেজির বস্তা ২১৫০ থেকে ২২৫০ টাকা দরে বিক্রি হওয়ার কথা ছিল। ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও সে দামের কোনো প্রভাব নেই বাজারে। বরং সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার আগে বাড়তি যে দাম ছিল, এখনো সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল।
বর্তমানে খুচরা বাজারে মিনিকেট ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর পাইকারি বাজারে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট চালের দাম পড়ছে ২৭৫০ থেকে ২৮০০ টাকা, আটাশ ২৪০০ টাকা ও নাজিরশাইল ২৩০০ থেকে থেকে ৩০০০ টাকা।
বিসমিল্লাহ স্টোরের মালিক গাফফার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, চালের দাম আগের মতোই রয়েছে। মহাখালীর বউবাজারের দোকানি শরিফ মিয়া বলেন, চালের দাম এখনো বাড়তি রয়েছে। কারওয়ান বাজারের হাজী ইসমাইল অ্যান্ড সন্সের মালিক জসিম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, নতুন করে চালের দাম আর কমেনি।
এদিকে, কারওয়ানবাজারে গরু ৬০০ ও খাশি ৯০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকা, পাকিস্তানি কর্ক ২২০ টাকা ও সাদা কর্ক ২০০ ও দেশি মুরগি ৪৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মুরগির দাম গেল সপ্তাহের তুলনায় কমেনি।