Saturday 05 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ভাঙো নারী লজ্জা-ভয়, মানব না আর পরাজয়’


১০ অক্টোবর ২০২০ ১৯:৫০ | আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২০ ১৯:৫২
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকা। সেখানে জড়ো হয়েছেন হাজারও মানুষ। হাতে হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে স্লোগান— ‘পথে ঘাটে দিনেরাতে, চলতে চাই নিরাপদে’, ‘ভাঙো নারী লজ্জা-ভয়, মানব না আর পরাজয়’, ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও একসাথে’, ‘সবাই মিলে এগিয়ে চলি, নারী নির্যাতন বন্ধ করি’, ‘সইব নাকো আমরা আর, নারীর দেহে অত্যাচার’, ‘লড়াই করেছি করব, মুক্তি চাই, রক্ষা নয়’।

দেশব্যাপী নারী ও শিশু ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা, যৌন হয়রানি, নির্যাতন-নিপীড়নের প্রতিবাদে একত্রিত হয়েছেন তারা। দাবি তুলেছেন, দিনের পর দিন ঘরে-বাইরে নারী-শিশুকে যেভাবে সহিংতার শিকার হতে হচ্ছে, তার অবসান ঘটাতে হবে। যে সংস্কৃতি একজন পুরুষকে নিপীড়ক করে তোলে, ধর্ষক করে তোলে— অবসান ঘটাতে সেই সংস্কৃতির। গড়ে তুলতে হবে সহিংসতামুক্ত এক বাংলাদেশ, যেখানে মেয়েরাও তাদের জীবন ও জীবিকার অধিকার স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে নারীর জন্য নিরাপদ এক বাংলাদেশের এমন দাবিতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জড়ো হয়েছিলেন হাজারও মানুষ। সিলেটের মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনসহ দেশব্যাপি নারী ও শিশু ধর্ষণ-নির্যাতনের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

নারীপক্ষের ব্যানারে এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে বেশ কয়েকটি নারী সংগঠন। এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন নারীপক্ষের শিরিন পারভীন হক, রীনা রায়, তামান্নাখান পপি, অমিতা দে, রাশিদা হোসেনসহ অন্যরা। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা ধর্ষণসহ নারীর বিরুদ্ধে রুখে দাড়াঁনোর অঙ্গীকার করেন।

প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে সারাদেশে ৯৭৫ জন নারীকে ধর্ষণ, ৪৩ জন নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং ২০৪ জন নারীকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়ে ১২ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন। নারীর শরীরের ওপর সহিংসতা ও ভুক্তভোগীরা ন্যয় বিচার না পাওয়ার বিষয়গুলো আমাদের ক্রোধোন্মত্ত করেছে।

বক্তারা আরও বলেন, আমরা কেবল পুরুষ দ্বারা নারীর ওপর সহিংসতার ঘটনার প্রতিবাদ করছি না। যে সংস্কৃতি সহিংসতার জন্ম দেয় এবং এর প্রচার ও প্রসার ঘটায়, আমরা সেই সংস্কৃতির প্রতিবাদ করছি। সহিংসতার বিচার ও শাস্তির দাবি ছাড়াও আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করে জন্য সংগঠিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছি। নারীর শরীর তার ও তার পরিবারের সম্মান/সম্ভ্রম ধারণ করে— আমরা প্রচলিত এই ধ্যান-ধারণার প্রতিবাদ করছি। ‘নারীর দেহ পুরুষের সর্বময় অধিকার’— এমন স্বত্বমূলক ধারণার বিরুদ্ধে আমরা লড়ছি।

লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে কর্মসূচির উদ্যোক্তারা বলেন, বাংলাদেশের লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো এই সহিংসতাকে আমাদের সংস্কৃতির অংশ হিসাবে গণ্য করার মানসিকতা। আমরা বলতে চাই, এ লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাকে কখনই সংস্কৃতির অঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। সহিংসতামুক্ত বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র টপ নিউজ ধর্ষণ নারী নিপীড়ন নারীপক্ষ নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিবাদ প্রতিরোধ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ

বিজ্ঞাপন

সন্তান নিতে চান জয়া আহসান
৫ জুলাই ২০২৫ ২০:১৪

আরো

সম্পর্কিত খবর