আবরারকে মৃত ঘোষণাকারী বুয়েট চিকিৎসক সাক্ষ্য দিলেন
১১ অক্টোবর ২০২০ ১৮:৪৫
ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বুয়েট চিকিৎসক ডা. মো. মাসুক এলাহীর সাক্ষ্য দিয়েছেন।
রোববার (১১ অক্টোবর) ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ সাক্ষীর সাক্ষ্য দেন।
এদিন আদালতে জবানবন্দিতে ডা. মো. মাসুক এলাহী বলেন, ‘২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ভোর ৮টা থেকে ৭ অক্টোবর ভোর ৮টা পর্যন্ত বুয়েট মেডিকেল সেন্টারের ইমারজেন্সিতে কর্মরত ছিলাম। ৭ অক্টোবর রাত ২টার সময় আমার কাছে একজন ছাত্র পরিচয়ে ফোন করে বলে যে, একজন ছাত্র অসুস্থ, স্বাসকষ্ট হচ্ছে, দ্রুত শেরেবাংলা হলে আসতে।’
আমি অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার কালামকে সাথে নিয়ে ফোনের ১০ মিনিটের মধ্যে ওই হলের সামনে যাই। সেখানে যাওয়ার পর ১০-১৫ জন ছাত্র অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে ধরে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও স্ট্রেচার আনতে বলে। আমি বলি আগে রোগী দেখি, এরপর প্রয়োজন হলে যা করণীয় করবো। ছাত্ররা আমাকে উত্তর ব্লকের সিঁড়ির নিকট নিয়ে যায়। একতলা ও দোতলার মাঝামাঝি সিঁড়িতে ট্রাউজার ও ফুলহাতা শার্ট পরিধানরত তোষকের ওপর শোয়ানো অবস্থায় ছাত্র আবরারকে দেখতে পাই। তোষক ও ট্রাউজার ভেজা ছিল।’
‘এরপর আমি পরীক্ষা থেকে তাকে মৃত ঘোষণা করি। এর মধ্যে আমার পাশে দাঁড়ানো ১০-১৫ জন ছাত্ররা দ্রুত চলে যায়। কিছুক্ষণ পর একজন ছাত্র আসে। সে নিজের নাম রাসেল ও বুয়েট শাখার ছাত্র লীগের সেক্রেটারি পরিচয় দেয়। সে বলে আবরার মারা যায়নি। সে ঘুমাচ্ছে। কিছুক্ষণ আগেও আমরা সাথে তার কথা হয়েছে। সে বলে, আপিন ওকে বুয়েট মেডিকেলে বা ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। আমি বলি নিয়ে লাভ নেই, সে মারা গেছে।’
‘এর কিছু সময় পরে আমি বুয়েটের প্রভোস্ট ড. জাফর ইকবাল স্যারকে ফোন দিয়ে ঘটনা জানাই। তিনিসহ ডিএসডব্লুউ স্যার ও সহকারী প্রভোস্ট স্যার আসেন। বুয়েটের সিকিউরিটি অফিসার আজাদ এসে পুলিশকে ফোন দিলে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে পুলিশ এসে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে আমার স্বাক্ষর নেয়। পরবর্তীতে বুয়েটের যে অ্যাম্বুলেন্স ও স্ট্রেচারে আবরারের লাশ ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয় সেই অ্যাস্বুলেন্স ও স্ট্রেচার পুলিশ জব্দ করে সেই জব্দ তালিকায় আমি স্বাক্ষর করি।’
এসময় মামলার রাষ্ট্র ও বুয়েট কর্তৃক নিয়োগকৃত প্রসিকিউটর এহসানুল হক সমাজী ও রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর মো. আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া সাক্ষ্য গ্রহণে ট্রাইব্যুনালকে সহায়তা করেন।
মামলায় ২২ জন আসামি কারাগারে রয়েছেন। যাদের সাক্ষ্য গ্রহণকালে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। অপর তিন জন আসামি পলাতক আছেন।
এর আগে মামলাটিতে নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্ল্যাহসহ চার জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।