সাজা মৃত্যুদণ্ড করায় ধর্ষণ কমবে: আইনমন্ত্রী
১২ অক্টোবর ২০২০ ১৬:০০
ঢাকা: ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ড করায় এই অপরাধের সংখ্যা কমবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। সোমবার (১২ অক্টোবর) আইনমন্ত্রী তার গুলশানের বাসভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নিশ্চয় বিশ্বাস করি, ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ড করায় এই অপরাধ কমে আসবে। না হলে সাজা বাড়ানোর প্রশ্নে আসতাম না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর (১) ধারায় ধর্ষণের জন্য যে সাজা আছে, তা ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আজকে এই আইনের ৯ (১) ধারায় ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবনের পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ড করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি একটি সংশোধন প্রস্তাব উত্থাপন করি। সেটা হচ্ছে ধর্ষণের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু ৯(১) ধারা সংশোধন করা হচ্ছে, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৯(৪) ধারায়ও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আর সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১১ (গ)। যেখানে সাধারণ জখম অপরাধে আপোষযোগ্য ছিল না। সেখানে আপোষযোগ্য করার একটা নির্দেশ ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়েও কথা হয়। সেখানেও সংশোধন করে আপোষযোগ্য করা হয়েছে।’
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, অধ্যাদেশ জারি মঙ্গলবার
মন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটি সংশোধনী হচ্ছে— শিশু আইন ১৯৭৪। নতুন করে ২০১৩ সালে এই সরকার সংসদে পাস করেছে। সেই আইনেরও আমরা সংশোধনী এনেছি। এই সকল সংশোধনী আজকের মন্ত্রীসভার বৈঠকে উত্থাপন করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় সংশোধনীগুলোর চুড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু সংসদ অধিবেশন এখন নেই, ফলে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এটাকে অধ্যাদেশ করার জন্য। আমরা আগামিকাল মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশবলে এটাকে অধ্যাদেশ জারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
সাক্ষী সুরক্ষা আইনের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।
যেসব আইনের সংশোধনী আনা হচ্ছে—
নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোন পুরুষ কোন নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷
৯ এর (৪) ধারায় বলা হয়েছে- (ক) ধর্ষণ করিয়া মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন;
(খ) ধর্ষণের চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক দশ বৎসর কিন্তু অন্যুন পাঁচ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷
১১ এর (গ) ধারায় বলা হয়েছে, সাধারণ জখম (simple hurt) করার জন্য অনধিক তিন বৎসর কিন্তু অন্যুন এক বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন।