আইএসপিএবি’র ৫ দাবি, না মানলে ১৮ অক্টোবর থেকে ইন্টারনেট বন্ধ
১২ অক্টোবর ২০২০ ১৯:৩২ | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২০ ২৩:৪৯
ঢাকা: বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে ঝুলন্ত তার অপসারণের প্রতিবাদ জানিয়ে ৫ দফা দাবি তুলেছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং ক্যাবল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। দাবি মানা না হলে আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে সারাদেশের ইন্টারনেট ও টিভির ক্যাবল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনগুলো।
সোমবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানায় সংগঠনগুলো।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী ১৭ অক্টোবরের মধ্যে দাবি মানা না হলে ১৮ অক্টোবর রোববার থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত সারা দেশে বাসা-বাড়ি, অফিস ও ব্যাংকসহ সব পর্যায়ে ইন্টারনেট ডাটা কানেক্টিভিটি এবং ক্যাবল টিভি বন্ধ রাখা হবে।
তাদের দাবিগুলো হলো- আইএসপিএবি, কোয়াব, বিটিআরসি, এনটিটিএন এবং সিটি করপোরেশন সমন্বয়ে ‘লাস্ট মেইল ক্যাবল’ স্থাপন করা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত করার জন্য একটি কমিটির মাধ্যমে সরেজমিন তদন্তের ব্যবস্থা করা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাসা-বাড়ি, অফিস ও ব্যাংকসহ সব পর্যায়ে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবার মূল্য নির্ধারণ করা, গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবা স্বল্পমূল্যে দেওয়ার লক্ষ্যে এনটিটিএনের মূল্য সরকারের মাধ্যমে নির্ধারণ করা এবং গ্রাহক পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদানে নিশ্চয়তার পক্ষে এনটিটিএনগুলো সার্বিক সক্ষমতা আছে কিনা, তা যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা।
সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি’র সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, “যোগাযোগ-প্রযুক্তি ছাড়াও বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা ও চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে ইন্টারনেট কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। একইসঙ্গে করোনা পরিস্থিতিতে সারা দেশে টেলিভিশন দর্শকদের দেশ-বিদেশের টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ সংবাদ, বিনোদন, শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ করে দিয়েছে ক্যাবল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। এককথায় বললে, দেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রায় সবগুলো খাতে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়তে আইএসপিএবি এবং কোয়াব বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে।”
তিনি আরও বলেন, ‘এতো সব অবদানের পরও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গত আগস্ট মাস থেকে আইএসপি ও ক্যাবল টিভি অপারেটরদের কোনো নোটিশ দেওয়া ছাড়াই প্রধান সড়কসহ সব সড়ক থেকে ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ করা শুরু করে। এতে গত দুই মাসে আনুমানিক ২০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে আইএসপিএবি ও কোয়াবকে।’
সৌন্দর্যবর্ধনে ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণে গৃহীত ঢাকা দক্ষিণ সিটির সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে আইএসপিএবি ও কোয়াবের পক্ষ থেকে বলা হয়, “কিন্তু কোনো আগাম নোটিশ না দিয়ে, কয়েক লাখ ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি গ্রাহকের সেবা নিশ্চিত না করে, কোটি কোটি টাকার ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ কোনও যৌক্তিক সমাধান নয় বলে মনে করছি। এর ফলে কয়েক লাখ ইন্টারনেট ও কেবল টিভি গ্রাহক যেমন ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন, একইসঙ্গে চলমান অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হবে কয়েক লাখ শিক্ষার্থী। পাশাপাশি এসব এলাকায় করোনায় সেবাদাতা হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ অনলাইন স্বাস্থ্যসেবাও বিঘ্নিত হচ্ছে এবং হবে, যা প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার পথে অন্তরায়।”
এসময় হুঁশিয়ারি দিয়ে কোয়াব সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশেনের মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, বর্তমান কোভিড মহামারির এই সময়ে অগণিত ইন্টারনেট ও ক্যাবল টিভি অপারেটরের কথা বিবেচনা ও আমাদের দাবিগুলো সমাধান করে ইন্টারনেট এবং ক্যাবল টিভি খাতকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। অন্যথায় সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আমরা কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’