সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ না করায় ৭৬ মালিক কালো তালিকাভুক্ত
১৪ অক্টোবর ২০২০ ২১:৩৫
চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় চুক্তি অনুযায়ী সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ না করায় ৭৬ চালকল মালিককে কালো তালিকাভুক্ত করেছে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। ৭৬ চালকল মালিকদের মধ্যে ৪২ জন চুক্তি অনুযায়ী আংশিক ও ৩৪ জন কোনো চালই সরবরাহ করেননি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি অভ্যন্তরীণ বোরো মৌসুমে তিনটি অটোরাইচমিলসহ জেলার ১৯৭ জন চালকল মালিক ৭ হাজার ৬০৫ মেট্টিকটন চাল সরবরাহের জন্য সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। গত ১৩ মে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের মধ্য দিয়ে সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চাল সংগ্রহের শেষ সময় নির্ধারণ করা হলে পরবর্তীতে তা ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। চাল উৎপাদনে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা খরচ হলেও সেখানে সরকার ব্যবসায়ীদের ৩৬ টাকায় চাল সরবরাহের নির্দেশ দেয়। সরকারের সঙ্গে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে চাল মালিকদের একটি বড় অংশই লোকসান গুনেছে।
জেলায় তিনটি স্বয়ংক্রীয় চালকলসহ ১২১টি চালকল মালিক তাদের চুক্তি করা ৪ হাজার ৮৮৭ দশমিক ৫১০ মেট্রিক টন চালের শতভাগ সরবরাহ করে। ৪২ জন চালকল মালিক তাদের ২ হাজার ১৫৪ দশমিক ১৫০ মেট্টিক টন চুক্তির বিপরীতে আংশিক ৯৮৩ দশমিক ৭৬০ মেট্টিক টন (প্রায় ৪৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ ) সরবরাহ করে। বাকি ৩৪ জন মালিক ৫৬৩ দশমিক ৩১০ মেট্রিক টন চাল সরবরাহের জন্য চুক্তি করলেও কোনো চালই তারা সরবরাহ করেনি। তাদের মধ্যে সদর উপজেলায় সদর ১৫ চালকল হলো মেসার্স ফ্রেন্ডস রাইচ মিল, মেসার্স মীর কাশেম রাইচ মিল, মেসার্স ছাদেক আলী রাইচ মিল, মেসার্স মদিনা রাইচ মিল ,মেসার্স নীল মিয়া রাইচ মিল, মেসার্স বাহার আলী রাইচ মিল, মেসার্স গণি রাইচ মিল, মেসার্স আব্দুর রাজ্জাক রাইচ মিল, মেসার্স হাওয়া রাইচ মিল ,মেসার্স হামিদুর রহমান রাইচ মিল, মেসার্স খাইরুল রাইচ মিল, মেসার্স মোল্লা রাইচ মিল, মেসার্স শুকুর আলী রাইচ মিল, মেসার্স এসবি রাইচ মিল ,মেসার্স পান্না এন্টারপ্রাইজ রাইচ মিল, জীবননগর ১০টি চালকল হলো মেসার্স শুকুর আলী রাইচ মিল, মেসার্স আলী আহাম্মদ রাইচ মিল, মেসার্স আব্দুল মালেক মোল্লা রাইচ মিল, মেসার্স মা
জননী রাইচ মিল, মেসার্স রফিকুল রাইচ মিল, মেসার্স মা রাইচ মিল, মেসার্স আর.কে. রাইচ মিল, মেসার্স রোকেয়া রাইচ মিল, মেসার্স মা বাবার দোয়া রাইচ মিল, মেসার্স লতিফ রাইচ মিল ও আলমডাঙ্গা উপজেলার ৯টি চালকল হলো মেসার্স মুনসেমি অটো রাইচ মিল, মেসার্স আফসার উদ্দিন রাইচ মিল, মেসার্স জননী রাইচ মিল, মেসার্স জসিম
উদ্দিন রাইচ মিল, মেসার্স আবুল কালাম আজাদ রাইচ মিল।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজাউল ইসলাম জানান, কালো তালিকাভুক্ত চালকল মালিকরা ২ বছর সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ করতে পারবে না। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত চাল সরবরাহে ব্যর্থ মালিকদের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা।
চুয়াডাঙ্গা জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি এম.আব্দুল্লা শেখ বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে চালকল মালিকরা কীভাবে সরকারি গুদামে তাদের চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ করে তা কেন্দ্রীয় খাদ্য অধিদফতর থেকে সরেজমিনে এসে দেখা উচিত। যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বাস্তব সম্মত ভাবনা না থাকলে কোন কিছুই ঠিক মত হবে না। বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি নেই চালের বাজার দর, সেখানে মালিকরা কেনো এত লোকসান দেবে? যেখানে চাল উৎপাদন খরচ ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা সেখানে চালকল মালিকদের ৩৬ টাকায় চাল সরবরাহ করতে বলাটা কতটা সংগতিপূর্ণ তা ভেবে দেখা উচিত।