জিপিএইচের তৈরি লোহার পাত যাচ্ছে চীনে
১৫ অক্টোবর ২০২০ ১৩:১৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চীনে রফতানি পণ্যের তালিকায় প্রথমবারের মতো যুক্ত হচ্ছে দেশে তৈরি লোহার পাত। দেশের শীর্ষস্থানীয় ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড’ নভেম্বর মাসে চীনে রফতানি করতে যাচ্ছে প্রায় ১ কোটি মার্কিন ডলারের বিলেট বা লোহার পাত।
এর আগে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় স্বল্প পরিমাণে লোহার পাত রফতানি হলেও চীন এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে লোহার পাত নিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববাজারে হাজার কোটি ডলারের লোহার পাত রফতানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জিপিএইচ’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নভেম্বরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২৫ হাজার মেট্রিকটন বিলেট নিয়ে জাহাজ চীনে যাবে। প্রথম দফায় চীনে রফতানি করা হচ্ছে ১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৮৭ কোটি টাকার বিলেট। চীনের জিয়াংগিন বন্দরে এসব বিলেট পাঠানোর প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
জিপিএইচ বার্ষিক ১০ লাখ মেট্রিকটন ইস্পাত উৎপাদন করে। ২০০৮ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় প্রতিষ্ঠানটি আড়াই হাজার মেট্রিকটন বিলেট রফতানি করেছিল। তবে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কিছু সংকটের কারণে পরবর্তীতে এই রফতানি বন্ধ হয়ে যায়। চীনে রফতানির মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি আবারও প্রবেশ করছে বিশ্ববাজারে। চলতি অর্থবছরে তারা এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিলেট রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
জিপিএইচর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল বলেন, ‘আমরা কোয়ান্টাম আর্ক ফার্নেস প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বমানের বিলেট উৎপাদন করছি। এজন্যই বিশ্ববাজারে আমরা প্রবেশ করতে পারছি। চীনে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৮৭ কোটি টাকার বিলেট আমরা রফতানি করছি। এই ধারা অব্যাহত রেখে চলতি অর্থবছরে আমরা রফতানির আরও বড় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।’
জিপিএইচর মিডিয়া অ্যাডভাইজার ওসমান গণি চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশের স্টিল সেক্টর অনেকদূর এগিয়ে গেছে, যাতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে জিপিএইচ। চীনে বিলেট রফতানি বিশ্ববাজারে দেশের ইমেজ বৃদ্ধি করবে। এখানে সরকারের একটা ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া এবং রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে বিশ্ববাজারে বিলেট রফতানির যে সম্ভাবনা আছে, সেটাকে কাজে লাগানো যাবে।’
দেশে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৪০০ ইস্পাত কারখানা আছে, যার বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮০ লাখ মেট্রিকটন। এসব কারখানার বড় অংশই চট্টগ্রামে। বড় কারখানার মধ্যে কেএসআরএম, বিএসআরএম, একেএস, জিপিএইচ ইস্পাত, আরএসআরএম-এ উৎপাদিত লোহার রডের প্রায় ৫৫ লাখ মেট্রিকটন দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যবহার হয়। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাকি ইস্পাত বিশ্ববাজারে পৌঁছে দেওয়া গেলে তৈরি পোশাকের পর ইস্পাতই হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি খাত, এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।