আমন নিয়ে অনিশ্চয়তায় সরকার
১৫ অক্টোবর ২০২০ ১৬:৪১
ঢাকা: এবছর দফায় দফায় বন্যার কারণে আমনের উৎপাদন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। উৎপাদন কম হলে চালের ঘাটতি হওয়ার আশংকা করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এ কথা জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বন্যার কারণে আমনের উৎপাদন কম হবে। তাই বোরো ধান আসার আগে পর্যন্ত চালের একটা ঘাটতি হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন হলে চাল আমদানি করা হবে। চাল আমদানি করবো কিনা সেজন্য আমরা আরও ১৫/২০ দিন দেখবো তারপর সিদ্ধান্ত নেবো। আমি মনে করি বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতি হলেও হাহাকার হবে না। যদি আমনের বেশি ঘাটতি হয়ে যায় তাহলে চাল আমদানি করতে হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী এজন্য সীমিত পরিসরে চাল আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন।’ সেখানে হয়তো ৫ থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন চাল আনা লাগতে পারে বলে জানান তিনি।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ করে চাল ও আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয় থেকে কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করছি সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে উঁচু জমিগুলোতে আমন ভালো হবে। যে পরিমান খাদ্য আছে তা দিয়ে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে কম মূল্যে দরিদ্র মানুষের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে। আমাদের সবচেয়ে বড় যে কাজ, ক্ষয়ক্ষতির ফলে চাষিরা যাতে বিপদগ্রস্ত হয়ে না পড়েন। তাদের জন্য রবি ফসলের ব্যাপক পুনর্বাসন কর্মসূচি নিয়েছি। এবার বিনামূল্যে আরও বেশি করে হাইব্রিড বীজ চাষিদের দেওয়া হবে, যাতে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়।’
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মোটা চালের দাম কম থাকায় মানুষ পশুর খাদ্য হিসেবে তা ব্যবহার করতো। এই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এবার হাইব্রিড দিয়ে উৎপাদন বাড়াবো। যাতে আগামী বোরোতে যাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চালের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারি। একই সঙ্গে কৃষিকে যাত্রিকীকরণের জন্য ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছি। এতে করে আমন ও বোরো মৌসুমে ধান কাটা সহজ হবে। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমে আসবে। আমরা মনে করছি আগামী বোরো মৌসুমে ব্যাপক হারে ধানকাটার মেশিন দিতে পারবো। এতে কৃষি শ্রমিকের মজুরি কিছুটা সহনীয়সহ চাষিরা লাভবান হবে।’
বোরো উঠাপর্যন্ত চালের সংকট থাকবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমনটা দেখি কেমন উৎপাদন হয়, তবে ব্যাপক ক্রাইসিস হবে না। প্রধানমন্ত্রী খাদ্যমন্ত্রণালয়কে চাল আমদানির একটা নীতিগত অনুমোদন দিয়ে রেখেছে। যদি দেখা যায় যে বেশ দাম বেড়েছে, সে ক্ষেত্রে অত্যন্ত সীমিত পরিমাণ ৫ বা ৬ লাখ টন সুনির্দিষ্ট পরিমাণ চাল আমদানি করা হতে পারে।’ তবে সেটা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।