৩ বছর ধরে ধর্ষণ, পূর্বাশা গ্রুপের এমডির বিরুদ্ধে মামলা
২০ অক্টোবর ২০২০ ১৮:৩৯
ঢাকা: ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে তিন বছর ধরে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে পূর্বাশা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আলী হোসেনের (৬০) নামে মামলা হয়েছে। সোমবার (১৯ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় প্রবাসীর ওই স্ত্রী মামলা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২০ এর ৯(১)সহ ৩১৩/৫১৬ ধারায় মামলাটি করেন। মামলা নম্বর-২৫-১৯/১০/২০।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপন চন্দ্র সাহা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সোমবার (১৯ অক্টোবর) রাতে এক নারী মামলা করেছেন। সেটির তদন্ত চলছে। আসামিকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।’
মামলার এজাহারে ওই নারী উল্লেখ করেছেন, তিনি একটি কোম্পানিতে সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং বিভাগে চাকরি করতেন। গার্মেন্টস পণ্য প্রতিষ্ঠান পূর্বাশা গ্রুপের এমডি আলী হোসেন ওই কোম্পানির করপোরেট গ্রাহকদের মধ্যে একজন। সেই সূত্রে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর ২০১৮ সালের ১৯ জুন প্রথম ৭ নম্বর সেক্টরের লেক ড্রাইভ রোডের ৬৮ নম্বর বাসার ষষ্ঠ তলায় বিকেল ৫টায় সাক্ষাৎ হয়। ওইদিন ব্যবসা সংক্রান্ত কথা বলার একপর্যায়ে তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এরপর ওই নারী পড়ে গিয়ে পায়ে আঘাত পেয়ে আহত হলে এ সময় আলী হোসেন ওই নারীকে ধর্ষণ করেন।
২০১৮ সালের ৫ জুলাই ওই নারীকে ফোন করে জানায়, ১৯ জুনের ঘটনার ছবি ও ভিডিও করা হয়েছে। কথামতো না চললে তার কাছে থাকা নগ্ন ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন। এরপর ২০১৮ সালের ২১ জুলাই তার অফিসে গিয়ে শারীরিক অবস্থা খারাপ জানালে তাকে হাসপাতালে নিয়ে টেস্ট করালে প্রেগনেন্সি পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর চাপ দিয়ে গর্ভপাত করায় আলী হোসেন।
একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টায় পুনরায় ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ফের ধর্ষণ করে। এরপর ২০১৯ সালের ১ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে ছবি ও ভিডিও প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠানোর ভয় দেখিয়ে আবার ধর্ষণ করে।
এ ঘটনার পর ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট প্রেগনেন্সি পজেটিভ ধরা পড়লে আবারও জোর করে গর্ভপাত করায় আলী হোসেন।
এরপর চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টায়, ৬ মার্চ ও ১৩ মার্চ সাড়ে ৪টায় ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে। তার কথামতো না চলায় প্রায় সময়ই বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন আলী হোসেন। তার কাছে থাকা ছবি ও ভিডিও প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে ধর্ষণের শিকার ওই নারী সারাবাংলাকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আলী হোসেন আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত শারীরিক নির্যাতন করেছে। আমি তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আলী হোসেনকে মোবাইল ফোনে কল করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।