কাশ্মির টাইমসের অফিস সিলগালা
২১ অক্টোবর ২০২০ ১০:৫৭
জম্মু এবং কাশ্মির উপত্যকার প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক কাশ্মির টাইমসের শ্রীনগর অফিস সিলগালা করে দিয়েছে কেন্দ্র নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মির প্রশাসনের এস্টেট বিভাগ। খবর হিন্দুস্থান টাইমস।
সোমবার (১৯ অক্টোবর) স্থানীয় সময় রাতে স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতি এই ঘটনা ঘটে।
মাইক্রো ব্লগিং ওয়েবসাইট টুইটারে এক প্রতিক্রিয়ায় কাশ্মির টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক অনুরাধা ভাসিন বলেছেন, স্বাধীন মত প্রকাশ করায় স্থানীয় প্রশাসন তাদের গণমাধ্যমের অফিস বন্ধ করে দিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে।
Today, Estates Deptt locked our office without any due process of cancellation & eviction, same way as I was evicted from a flat in Jammu, where my belongings including valuables were handed over to "new allottee". Vendetta for speaking out! No due process followed. How peevish! pic.twitter.com/J5P0eKxvbx
— Anuradha Bhasin (@AnuradhaBhasin_) October 19, 2020
একইভাবে, জম্মুর একটি ফ্ল্যাট থেকে বরাদ্দ বাতিলের অজুহাতে তাকে উচ্ছেদ করা হয় এমনকি তার জিনিসপত্রগুলোও তাকে নিতে দেওয়া হয়নি – বলেন অনুরাধা ভাসিন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় এস্টেট বিভাগের তরফ থেকে বলা হয়েছে, কাশ্মির টাইমসের অফিসটি বেআইনিভাবে দখল করে রাখা হয়েছিল। এস্টেট বিভাগ তার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়েছে।
এস্টেট বিভাগের বরাতে হিন্দুস্থান টাইমস জানিয়েছে, কাশ্মির টাইমসের অফিস কমপ্লেক্সের জায়গাটি পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বেদ ভাসিনের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ২০১৫ সালে তার মৃত্যুর পর থেকে ওই জায়গার প্রকৃত মালিকানা কারও নামে না থাকার কারণ দেখিয়ে পত্রিকা অফিস সিলগালা করে দেওয়া হয়।
কাশ্মির টাইমস এডিটর’স গিল্ড (কেইজি) জানিয়েছে, কোনো আগাম উচ্ছেদ নোটিশ না দিয়েই এস্টেট বিভাগ পত্রিকা অফিস সিলগালা করে দিয়ে কেন্দ্র সরকারের বিরোধী মতামত দমনের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে।
কাশ্মির উপত্যকার প্রাচীন এই মুখপত্রের ওপর নেমে আসা সরকারি হয়রানির কড়া সমালোচনা করেছেন ভারতের বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ এবং শীর্ষ সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন।
পাশাপাশি, ভারতের ১১ জন সাংবাদিক কাশ্মির টাইমসের এই পরিস্থিতিতে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং সরকারের এমন পদক্ষেপকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে বিবৃতি দিয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে কাশ্মিরের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাজিদ মাকবুল বলেন, এ ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কাশ্মিরের স্বাধীন কণ্ঠস্বররোধ করা যাবে না।
কাশ্মির টাইমস বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর আঘাত বলে আখ্যা দিয়েছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএফএস)। স্বাধীন গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করতে এমন সরকারি হস্তক্ষেপে সংগঠনটি হতবাক বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৩৭০ ধারা বাতিলসহ কাশ্মিরে ইন্টারনেট ব্লাকআউট, বিরোধী মতামত দমনে সরকারি খুন এবং গ্রেফতার-হয়রানির ব্যাপারে শুরু থেকেই সোচ্চার কাশ্মির টাইমস। পত্রিকাটির প্রধান কার্যালয় জম্মুতে।