নাগর্নো-কারাবাখের যুদ্ধে ৫ হাজার প্রাণহানি: রাশিয়া
২৩ অক্টোবর ২০২০ ১৬:০০
বিরোধপূর্ণ নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে যুদ্ধে অন্তত পাঁচ হাজার প্রাণহানি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খবর ডয়চে ভেলে।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) এক টেলিভিশন বিবৃতিতে এ কথা জানান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ওই টেলিভিশন ভাষণে পুতিন বলেন, আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া দুইটি দেশের সঙ্গেই প্রতিদিন যোগাযোগ রাখছেন তিনি। দিনে একাধিকবার ফোনে কথা হচ্ছে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে।
তার বক্তব্য অনুসারে, এই যুদ্ধে কোনো পক্ষকেই সমর্থন করছেন না তিনি। যুদ্ধ যেনো দ্রুত থামে তার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রকেও রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা আলোচনায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই (২৩ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রী মাইক পম্পেও’র সঙ্গে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হওয়ার কথা। বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অপরদিকে, নাগর্নো-কারাবাখের স্বাধীন প্রশাসন যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির একটি হিসেব দিয়েছে। তাদের বক্তব্য অনুসারে, শুধুমাত্র নাগর্নো-কারাবাখে বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) পর্যন্ত ৮৭৪ জন সেনা এবং ৩৭ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আজারবাইজান জানিয়েছে, সেখানে ৬১ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তবে, সেনা মৃত্যুর কোনো সংখ্যা জানানো হয়নি। আর্মেনিয়া কিছু দিন আগে জানিয়েছিল, যুদ্ধে হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে পুতিন জানিয়েছেন, তার কাছে যা খবর, তাতে অন্তত পাঁচ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। কারণ, দুই দেশের কেউই যুদ্ধবিরতি মানতে চাইছে না।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) পুতিন যখন এ বিষয়ে কথা বলছেন তখনো দুই দেশের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ চলছিল। আজারবাইজান জানিয়েছে, আর্মেনিয়া তিনটি ব্যালেস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে আজারি শহর লক্ষ্য করে। অন্যদিকে আর্মেনিয়ার অভিযোগ, মারতুনি শহর এবং সংলগ্ন গ্রামে শেলিং করেছে আজারবাইজান।
পুতিন পরিষ্কার ভাষায় জানিয়েছেন, এই যুদ্ধে তিনি কোনো পক্ষেই নেই। তার একমাত্র লক্ষ্য দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ দিন তুরস্কেরও মৃদু সমালোচনা করে পুতিন বলেছেন, তুরস্ক যেভাবে আজারবাইজানকে সমর্থন করছে, তা তিনি ভালো চোখে দেখেন না। যদিও একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এরদোয়ান তার বন্ধু। এবং তিনি মনে করেন, এরদোয়ান এ বিষয়ে তার অভিমত বদল করতে পারেন।
অন্যদিকে, চুক্তি অনুযায়ী আর্মেনিয়াকে সামরিক ক্ষেত্রে সাহায্য করার কথা রাশিয়ার। কারণ, দুই দেশের মধ্যে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট চুক্তি রয়েছে। কিন্তু পুতিনের বক্তব্য, এই যুদ্ধে কোনো পক্ষকে সাহায্য করলে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে যাবে। ফলে দুই পক্ষকে শান্তির পথে নিয়ে আসতেই হবে। এবং তার জন্য রাশিয়া সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী অবশ্য বুধবারই (২১ অক্টোবর) জানিয়ে দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে শান্তি প্রস্তাব তাদের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়।
পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) আজারবাইজান জানিয়েছে, আজারি ফৌজ নাগর্নো-কারাবাখের বিস্তীর্ণ এলাকা নিজেদের কব্জায় আনতে পেরেছে।
আজারবাইজান আর্মেনিয়া তুরস্ক নাগর্নো-কারাবাখ ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া