গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভে ফের উত্তাল ব্যাংকক
২৫ অক্টোবর ২০২০ ২২:০৭
থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচার পদত্যাগ চেয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বেধে দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় হাজারো বিক্ষোভকারীর পদচারণায় উত্তাল হয়ে উঠছে রাজধানী ব্যাংককের রাস্তা। খবর বিবিসি।
এর আগে, শনিবার (২৪ অক্টোবর) রাতেই ওই আলটিমেটামের সময়সীমা পেরিয়ে যায়। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে পদত্যাগের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
এদিকে ব্যাংককে সমাবেত হওয়া বিক্ষোভকারীদের একজন মুখপাত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা অহিংস বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। এছাড়াও, বিক্ষোভকারীদের প্রায়ুথ বিদায় স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখেছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
তবে, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে প্রকাশিত এক টুইটার বার্তায় জানানো হয়েছে – বিক্ষোভকারীরা যতই দাবি করুক না কেনো প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী দফতরের ওই টুইটার বার্তায় আরও বলা হয়, পার্লামেন্টে আলোচনার মাধ্যমেই উদ্ভূত সংকটের সমাধান সম্ভব, তাই আগামী দুই-একদিনের মধ্যে পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন বসানো হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের এক সেনা অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে থাইল্যান্ডের ক্ষমতায় বসেন সাবেক জেনারেল প্রায়ুথ চান ওচা। ২০১৯ সালের এক ‘বিতর্কিত’ সাধারণ নির্বাচনে জিতে তিনি আবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হন।
মূলতঃ ওই নির্বাচনের পর থেকেই ফলাফল বাতিল এবং পুনঃনির্বাচনের দাবিতে থাইল্যান্ডে বিক্ষোভ শুরু হয় ২০১৯ সালের জুলাই থেকে।
করোনা মহামারিতে বিশ্বব্যাপী আরোপিত লকডাউন শিথিল হওয়ার পর ফের বিক্ষোভকারীরা প্রায়ুথের পদত্যাগ, নতুন নির্বাচন, সংবিধান সংশোধন এবং রাজপরিবারের ক্ষমতা পুনঃনির্ধারণেরসহ আরও কয়েকটি দাবি নয়ে নতুন করে জড়ো হতে শুরু করেন।
যদিও, থাইল্যান্ডের প্রচলিত আইনে রাজা এবং রাজপরিবারের সমালোচনা দণ্ডনীয় অপরাধ তারপরও হলেও লাগাতার বিক্ষোভে জনতা সাহসী হয়ে উঠছে বলে আন্দোলন পর্যবেক্ষকরা জানাচ্ছেন।
অন্যদিকে, চলমান বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মধ্যেই শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) স্থানীয় সময় রাতে প্রটোকল ভেঙে জনতার ভিড়ের মধ্যে ঢুকে রাজতন্ত্রের সমর্থক ও শুভাকাঙ্খীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন থাই রাজা মহা বাজিরালংকর্ণ। স্থানীয় একটি মন্দিরে সস্ত্রীক উপস্থিত হয়েছিলেন থাই রাজা।
পাশাপাশি, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থাইল্যান্ডের প্রয়াত রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের ছবি হাতে একজনকে ধন্যবাদও জানান রাজা।
ব্যাংকক থেকে বিবিসি’র সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, রাজা মহা বাজিরালংকর্ণ জার্মানিতেই বছরের বেশিরভাগ সময় কাটান। তবে তিনি যখন থাইল্যান্ডে থাকেন তখন সাধারণত যে কোনো অনুষ্ঠানে তিনিই সভাপতিত্ব করেন। সেখানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার আলাপচারিতার সুযোগ থাকে কমই।উ
কিন্তু শুক্রবার নিয়মভেঙ্গে রাজা বাজিরালংকর্ণ মন্দিরে একটি অনুষ্ঠান শেষে রানি সুথিদাকে নিয়ে আম-জনতার ভিড়ে গিয়ে তাদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান। যা তার শাসনামলের এক বিরল ঘটনা।