Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হিমাগারে দাম কমলেও ঊর্ধ্বমুখী আলুর বাজার


২৬ অক্টোবর ২০২০ ১৩:০৭

ফাইল ছবি

জয়পুরহাট: রেকর্ড পরিমাণ আলু উপাদনের জেলা হিসাবে জয়পুরহাটের হিমাগারগুলোতে দাম কমলেও পাইকারি এবং খুচরা বাজারে আলুর দর বেড়েই চলছে। বিগত বছরে আলুর বাজারে ধস নামায় কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকরা বিপুল পরিমাণ লোকসান গুণলেও, এবাবের চিত্র একেবারেই উল্টো। আলুর ক্রয়ক্ষমতা বিশেষ করে অল্প আয়ের মানুষদের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় জেলা জুড়ে আলুর বাজারে  দেখা দিয়েছে অস্থিরতা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও জেলা মার্কেটিং বিভাগের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, জয়পুরহাটে গত মৌসুমে প্রায় ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৯ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। আর মৌসুমের শুরুতে ১ লাখ ৪৯ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতার মোট ১৮টি হিমাগারে কৃষক ও ব্যবসায়ী মিলে আলু সংরক্ষণ করেছিলেন প্রায় ১ লাখ ১৫ হাাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ও বিদেশে রফতানি করে ফুরিয়ে যায় প্রায় ৮ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন আলু।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে (২৪ অক্টোবর তারিখ পর্যন্ত) হিমাগারগুলোতে আরও প্রায় ৪৪ হাজার মেট্রিক টন আলু রাখা আছে। সংরক্ষিত এই ৪৪ হাজার মেট্রিক টন আলুর মধ্যে আবার বীজ আলু রয়েছে ২৮ হাজার মেট্রিক টন। ফলে অল্প পরিমান আলুর জন্য আলুর বাজারে দরে চলছে অস্থিরতা। হিমগারগুলোতে পাইকারি মূল্য প্রতি কেজি ২৭ টাকা বেঁধে দিয়ে নোটিশ ঝুলানো হলেও গোপনে ৩০/৩৩ টাকা বিক্রি হচ্ছে, আর খুচরো মূল্য আলুর জাত ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। এ অবস্থায় আলু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আলুর দর বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ সাধারণ ভোক্তাদের।

জয়পুরহাট শহরের সাহেব বাজারে শান্তিনগরের আসলাম হোসেন, পাঁচবিবি পৌর শহরের কাঁচা বাজারে চানপাড়া গ্রামের শাহারুল, আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর বাজারে জাফরপুর গ্রামের মোফাজ্জলসহ জেলার বিভিন্ন কাঁচাবাজার করতে অনেক ক্রেতারা অভিযোগে জানান, বিগত বছরগুলোতে এ সময় যেখানে সর্বোচ্চ ২০ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে হয়েছে, সেখানে এবারে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

শহরের নতুনহাটে আব্দুস সাত্তার, কালাই উপজেলার পুনট বাজারে সাহেব আলী, মজিবর রহমান, ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী বাজারে মিজানুর রহমানসহ অনেক আলু ব্যবসায়ী জানান, সিন্ডিকেট নয়, এবার কম উৎপাদন, বিদেশে আলু রফতানি, করোনাকালীন অন্যান্য খাদ্য সামগ্রীর সঙ্গে বিপুল পরিমান আলু বিতরণ, অতিবৃষ্টির কারণে অন্যান্য শাক-সবজির ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে আলুর চাহিদা বৃদ্ধি পায়। ফলে সরবরাহ কম হওয়ায় আলু দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

এসবের পরও সরকারি নির্দেশনায় হিমাগারগুলোতে পাইকারী মূল্য কেজি প্রতি ২৭ টাকা দরেই বিক্রি হচ্ছে বলে জানান সংরক্ষণকারী, ব্যবসায়ী ও হিমাগার কর্তৃপক্ষ।

কালাই উপজেলার এম ইশরাত হিমাগারের প্রধান হিসাবরক্ষক রায়হান আলম, সালামিন হিমাগারের ব্যবস্থাপক রতন কুমার, পাঁচবিবি উপজেলার কুশুম্বা হিমাগারের ব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান জিয়াসহ বিভিন্ন হিমাগারের কর্মকর্তারা জানান, আলু বিক্রি করেন সংরক্ষণকারি কৃষক ও ব্যবসায়িরা। তারপরও সরকারি নিদের্শনা মোতাবেক আলু বিক্রির জন্য তারা হিমাগারের বিভিন্ন স্থানে নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও হিমাগার এলাকায় আলুর বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মেফতাহুল বারী ও জেলা মার্কেটিং অফিসার রতন কুমার বাস্তবতা স্বীকার করে জানান, হিমাগারগুলোতে আলু কেনা ও সংরক্ষণসহ কেজি প্রতি খরচ হয়েছে ২২ থেকে ২৪ টাকা। ফলে সরকারি নির্দেশনায় আলু বিক্রি করা হলে সংরক্ষণকারিদের কোনো লোকসান হবে না বলেও জানান তিনি।

আলুর দর আলুর বাজার জয়পুরহাট হিমাগার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর