Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাস্ক ছাড়া ‘এন্ট্রি’মেলেনি মন্দিরে, দেবী আরাধনাতেও করোনামুক্তি


২৬ অক্টোবর ২০২০ ১৯:৪১

ঢাকা: ‘পুরো বছর অপেক্ষায় থাকি দুর্গা পূজার জন্য। কিন্তু অপেক্ষা শেষ হলেও এ বছর উৎসবের কোনো সুযোগ তো নেই। এবার আর কোনো প্রার্থনা নয়, মায়ের কাছে একটাই আরাধনা— করোনা থেকে মুক্তি।’

রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শারদীয় দুর্গা পূজার শেষ আনুষ্ঠানিকতা দেবী দুর্গার বিসর্জনের আগে আগে কথাগুলো বলছিলেন সুমনা দেব নাথ। গজে চড়ে মা দুর্গা মর্ত্য থেকে ফিরবেন কৈলাসে। তার আগে মা দুর্গাকে এ বছরের মতো শেষ বিদায় দিতে মন্দিরে এসেছিলেন সুমনা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলাকে তিনি বলেন, অন্যান্য বছর তো এই সময়টা দেবীর আরাধনার সঙ্গে সঙ্গে নাচ-গান দিয়ে উৎসবমুখর একটা পরিবেশ থাকে। কিন্তু এবার পূজার আনুষ্ঠানিকতাটা আছে, কিন্তু দুর্গা পূজা যে একটি সার্বজনীন উৎসব, সেই উৎসবটা এবার নেই। তবুও মা দেবীর চরণের ধুলা মাখতে হাজির হয়েছি করোনার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও। তাই এবার আর কোনো প্রার্থনা নেই। শুধু একটাই প্রার্থনা— করোনা থেকে মুক্তি।

ঢাকেশ্বরীতেই দশমীর আয়োজনে অংশ নিতে এসেছিলেন দেবী ভক্ত সপ্তর্ষী। তিনি বলেন, এবার আমাদের সবারই প্রত্যাশা একটাই— করোনাভাইরাসের হাত থেকে সবাই যেন মুক্তি পাই। অন্যান্য বছর তো আমাদের ছোট ভাই-বোনেরা এই দিনে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নেচে-গেয়ে আনন্দ উৎসব করে। এবার ছোট ভাই-বোনদের নিয়ে আসতে ভয়ই লেগেছে। তবু এসেছি, সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনেই এসেছি।

তিনি বলেন, অন্যান্য বছরে তুলনায় এবার মানুষের পদচারণা অনেক কম, অর্ধেকও হবে না। যারা এসেছেন, দেবীর আরাধনা আর পূজার আনুষ্ঠানিকতা রক্ষা করতেই এসেছেন। অনেকেই ঘরেই পূজার কিছু আনুষ্ঠানিকতা সেরেছেন।

কেবল দশমীর দিন নয়, এবারের দুর্গা পূজার সবগুলো আয়োজন-আচারের মধ্যেই করোনাভাইরাসের কবল থেকে মানুষের মুক্তির প্রার্থনা গুরুত্ব পেয়েছে। পূজারিরা জানালেন, সপ্তমী থেকে শুরু দশমী পর্যন্ত চার দিনই প্রার্থনার কেন্দ্রে ছিল জগতের সকল প্রাণীর কল্যাণ কামনা, সঙ্গে রোগ-শোক-জরা থেকে মুক্ত একটি পৃথিবী।

বিজ্ঞাপন

মাস্ক ছাড়া ‘এন্ট্রি নেই’ মন্দিরে

ঢাকেশ্বরী মন্দির ও রমনা কালীমন্দির ঘুরে দেখা গেছে, মাস্ক না পরলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকেই। সঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহারও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মন্দিরে প্রবেশের আগেই হ্যান্ড স্যানিটাইজ করে নিতে হচ্ছে সবাইকে। আর যারা সঙ্গে করে মাস্ক আনছেন না, তাদের আবার বাইরে গিয়ে মাস্ক কিনে নিয়ে আসতে হচ্ছে।

ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কিশোর রঞ্জন মন্ডল সারাবাংলাকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এবারের উৎসব সীমিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দেবী ভক্তদের মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই নির্দেশনা পুরোপুরি অনুসরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারিতে মন্দির এলাকা

যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মন্দির এলাকায় কড়া নজরদারি করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে।

নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বরত চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার ইলিয়াছ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, নিয়মিত টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি টহল টিমও বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক নজরদারির জন্য সিসিটিভি মনিটরিংও করা হচ্ছে।

ঢাকেশ্বরী মন্দির দুর্গা পূজা বিসর্জন শারদীয় দুর্গোৎসব শ্রী শ্রী রমনা কালী মন্দির

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর