জোয়ারের তোড়ে সংযোগ সড়ক খালে, হুমকিতে বেইলি ব্রিজ
২৭ অক্টোবর ২০২০ ১০:১৪
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নে যুগিরহাট বাজার সংলগ্ন ওয়াপদা খালের ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজটি ধসে পড়ার হুমকিতে রয়েছে। এরই মধ্যে জোয়ারের পানির তোড়ে ব্রিজের দক্ষিণ অংশের সড়ক ধসে পড়েছে। এতে ব্রিজের দুই পারের এলাকা অনেকটাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন শিগগিরই সড়ক মেরামত না করতে পারলে বেইলি ব্রিজটিই ধসে পড়তে পারে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, যুগিরহাট বাজার সংলগ্ন ওয়াপদা খালের দক্ষিণ প্রান্তে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে জকসিন-ভবেরহাট সড়কের একাংশ খালের মধ্যে ধসে পড়েছে। সড়কটিতে তাই যানচলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ব্রিজের দুই প্রান্তের এলাকা।
স্থানীয়রা বলছেন, যানচলাচল না থাকলেও সীমিত আকারে মানুষজন এই ভেঙে পড়া সড়ক ও বেইলি ব্রিজ দিয়ে চলাচল করছেন। কিন্তু যানবাহন না চলার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ব্রিজের উভয় পারের মানুষদেরই। অন্যদিকে সড়কের একাংশ খালে ধসে পড়ার পর যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে, তাতে করে গোটা সড়কই ধসে পড়তে পারে খালে। সেক্ষেত্রে বেইলি ব্রিজটিও ভেঙে পড়বে।
এলাকাবাসী জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ওয়াপদা) খালের জোয়ারের পানি তোড়ে সড়ক ভেঙে খালে ধসে পড়েছে। এখন ব্রিজটিও হুমকির মুখে রয়েছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার অবহিত করা হলেও কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
স্থানীয় চা দোকানি মো. মোরশেদ আলম বলেন, সম্প্রতি খালে অতিরিক্ত জোয়ারের পানির চাপে সড়কের পাশে থাকা তিনটি দোকানঘর আকস্মিকভাবে ভেঙে খালের পানিতে বিলীন হয়ে যায়। এর মধ্যে আমার চা দোকানটিও ছিল। এখন আমি ফুটপাতে কোনোরকমে চা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, জকসিন ও ভবেরহাটের কয়েক হাজার মানুষ এই ব্রিজ ও সংযোগ সড়কের ওপর নির্ভরশীল। এখন যে অবস্থা, তাতে এটি ব্যবহার করে হেঁচে চলাচল করাটাও ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় দুই গ্রামের মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে সড়কটিতে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা প্রয়োজন। কারণ ব্রিজটি একবার ভেঙে পড়লে নিশ্চিতভাবেই সেটি পুনঃনির্মাণের প্রক্রিয়াটি হবে অনেক বেশি দীর্ঘমেয়াদি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে লাহারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মশু সারাবাংলাকে বলেন, প্রথম দফায় জোয়ারের পানির তোড়ে কয়েকটি দোকানসহ সড়কের অর্ধেক অংশ ধসে পড়ে খালের মধ্যে। ওই সময়ই বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে আবার জোয়ারের পানিতে সড়কের আরও একটি অংশ ভেঙে গেলে। এখন খুব সামান্য একটু অংশ টিকে রয়েছে। এটুকুও ভেঙে পড়লে পুরো সড়কটি সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
এই ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, এমনিতেই দুই পারের মানুষজনের যাতায়াতের উপায় বলতে গেলে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন যে অবস্থা, তাতে গোটা সড়কটা পানিতে ধসে পড়লে তখন বেইলি ব্রিজটাই থাকবে না। ফলে সড়কটি মেরামত করা জরুরি। আমরা আবারও বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি। সেখান থেকে উদ্যোগ না নিলে তো আমরা কিছু করতে পারছি না।
সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাসুমের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনিও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার কথাই তুলে ধরেন। ইউএনও বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবো, তারা যেন সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়।